শিলিগুড়িতে সোমবার প্রশাসনিক বৈঠক যোগ দিয়ে সরকারি-বেসরকারি স্কুল ও কলেজ খোলার কথা ঘোষণা করলেন মুখ্যমন্ত্রী। তিনি বৈঠক শুরু হওয়ার কিছুক্ষণের মধ্যেই মুখ্যসচিবকে বলেন, পুজোর মরসুম শেষ হতেই, অর্থাৎ ছট পুজো ও জগদ্ধাত্রী পুজোর পর স্কুল-কলেজ খুলে দেওয়া হয়। তার আগে প্রস্তুতির জন্য সময় দেওয়ার কথাও বলেছেন মুখ্যমন্ত্রী। তিনি মুখ্যসচিবকে নির্দেশ দিয়ে বলেন, "স্কুল-কলেজ খোলার আগে প্রস্তুতির সময় দিতে হবে। দীর্ঘ দিন স্কুল বন্ধ ছিল। তাই কিছুটা সময় দিতে হবে স্কুলগুলিকে যাতে স্কুল কর্তৃপক্ষ পরিকাঠামোগত কাজ সেরে ফেলতে পারে। তার পরেই স্কুল শুরু হবে।"
প্রায় ২০ মাস পর খুলছে স্কুল। এর পাশাপাশি কলেজ খুলতেও নির্দেশ। তবে কীভাবে পড়ুয়ারা স্কুলে আসবে, তা নিয়ে নির্দিষ্ট পরিকল্পনার খসড়া তৈরি করা হচ্ছে। একসঙ্গে না এনে ধাপে ধাপে পড়ুয়াদের স্কুলে আনা হবে। তা নিয়ে স্পষ্ট নির্দেশনামা শীঘ্রই জানানো হবে। একইসঙ্গে কোন কোন ক্লাসের পড়ুয়াদের জন্য স্কুল খুলছে সে সম্পর্কে এখনও কোনও স্পষ্ট তথ্য মেলেনি। যদিও সূত্রের খবর, প্রথমে নবম-দশম, একাদশ-দ্বাদশ পরে ধাপে ধাপে বাকি ক্লাসের পড়ুয়াদেরও স্কুলে নিয়ে আসা হবে।
স্কুল কী ভাবে খোলা হবে, তা নিয়ে কার্যত এক প্রকার প্রস্তুতি নিয়ে ফেলেছে রাজ্য স্কুল শিক্ষা দফতর। জানা গিয়েছে, একই সঙ্গে নবম থেকে দ্বাদশ শ্রেণী পর্যন্ত সব ছাত্র ছাত্রীদের স্কুলে আনতে চাইছে না শিক্ষা দফতর। করোনা পরিস্থিতিকে মাথায় রেখে এক একটি ক্লাসের ছাত্র ছাত্রীদের জন্য একটি সময় নির্দিষ্ট করে দেওয়া হতে পারে। সে ক্ষেত্রে প্রত্যেকটি স্কুলে একই সঙ্গে একাধিক ছাত্র-ছাত্রীর জমায়েত হওয়ার সম্ভাবনা থাকবে না। একিসাথে একাধিক ক্লাসরুম করা হবে ছাত্র-ছাত্রীদের ক্লাস করার জন্য। অর্থাৎ সেক্ষেত্রে এক একটি ক্লাসের জন্য ক্লাস রুমের সংখ্যা বাড়ানো হবে। রাজ্য যা ভাবছে তা হল,
ধাপে ধাপে স্কুলে আনা হবে ছাত্র-ছাত্রীদের। অর্থাৎ নবম শ্রেণির ছাত্রছাত্রীদের সময় দেওয়া হবে সেই সময়ই একাদশ শ্রেণির ছাত্রছাত্রীদের ক্লাস নেওয়া হবে না। অর্থাৎ এক একটি ক্লাসের সময়সীমা একেক রকম থাকবে। তার জন্য নির্দিষ্ট সংখ্যক শিক্ষকও থাকবে যাতে পঠন-পাঠনে কোনও সমস্যা না হয়।
এক একটি ক্লাস রুমে কম সংখ্যক ছাত্র-ছাত্রীদের নিয়ে ক্লাস হবে। যাতে ক্লাসরুম গুলিতে ছাত্র ছাত্রীদের একাধিক জমায়াতে না হয়। সে ক্ষেত্রে প্রত্যেকটি বেঞ্চে একজন করেই ছাত্র-ছাত্রী বসাতে চাইছে রাজ্য। এক একটি ক্লাসের একাধিক সেকশন থাকে। প্রত্যেকটি সেকশনের ছাত্র-ছাত্রীদের একাধিক ক্লাসরুমে ভাগ করা হবে। যাতে একই সাথে একাধিক ছাত্র-ছাত্রী একটি ক্লাস রুমে বসতে না পারেন।
অভিভাবকদের থেকে সম্মতি নিয়ে আসতে হবে সেই ছাত্র বা ছাত্রী ক্লাস করতে চায়। যে অংশগুলির ওপর নির্ভর করে মাধ্যমিক ও উচ্চ মাধ্যমিক পরীক্ষা হবে সেই অংশগুলি আগে পড়ানো হবে। সেক্ষেত্রে তার জন্য নির্দিষ্ট করে নির্দেশিকা জারি করতে পারে দুই বোর্ড।
ইতিমধ্যেই ক্লাসরুম গুলি মেরামত-সহ স্যানিটাইজেশন এর কাজ শেষ করে দেওয়ার নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। পড়ুয়ারা করনা বিধি মানছে না কি সেই বিষয়েও নজরদারির জন্য প্রত্যেকটি স্কুলে দায়িত্ব দেওয়া হবে একটি নির্দিষ্ট সংখ্যক শিক্ষক-শিক্ষিকাদের। সব মিলিয়ে আপাত পাবে এই নিয়মে স্কুল চালু করার পরিকল্পনা নেওয়া হয়েছে। যদিও এই প্রস্তাবে চূড়ান্ত সীলমোহর দেবেন মুখ্যমন্ত্রী। সূত্রের খবর চলতি সপ্তাহের শেষে মুখ্য সচিব এই বিষয় নিয়ে স্কুল শিক্ষা দফতরের সঙ্গে একটি বৈঠক করতে পারেন।
0 মন্তব্য(গুলি):
একটি মন্তব্য পোস্ট করুন