নির্বাচনের মুখে প্রাথমিক শিক্ষক নিয়োগে অন্তর্বর্তী স্থগিতাদেশ দিয়েছে কলকাতা হাইকোর্ট। রাজ্যের শিক্ষামন্ত্রী পার্থ চট্টোপাধ্যায়ের প্রতিক্রিয়া, 'টেটে অনিয়ম হয়েছে বলে শুনিনি।' রাজ্যে প্রায় ১৬ হাজার শূন্যপদে প্রাথমিক শিক্ষক নিয়োগের বিজ্ঞপ্তি জারি করেছিল প্রাথমিক শিক্ষা পর্ষদ।
গতকাল টেট নিয়োগে স্থগিতাদেশ দেয় আদালত। একাধিক অনিয়মের অভিযোগ ওঠে। এই অভিযোগ গুলি নিয়োগ আটকে যাওয়ার পক্ষে যথেষ্ট বলে মনে করেন রাজ্যের আইনজীবীদের অনেকেই। ২০১৪ সালের প্রাইমারি টেটের নিয়োগে স্থগিতাদেশ দেয় কলকাতা হাইকোর্ট। রাজর্ষি ভরদ্বাজের সিঙ্গল বেঞ্চ সোমবার নিয়োগে এই স্থগিতাদেশ দেয়। মামলার নিষ্পত্তি না হওয়া পর্যন্ত স্থগিতাদেশ বহাল থাকবে। অস্বচ্ছ মেধাতালিকা প্রকাশের অভিযোগ তুলে আদালতের দ্বারস্থ হয়েছিলেন বেশ কয়েকজন পরীক্ষার্থী। মামলাকারীদের তরফে যে সমস্ত বিষয় নিয়ে আদালতে অভিযোগ জানানো হয়েছে তার মধ্যে অন্যতম হল, নিয়োগের জন্য কোনও মেধা তালিকা প্রকাশ করা হয়নি। যাঁরা নিয়োগের জন্য বিবেচিত হয়েছেন, শুধু তাঁরাই অনলাইনে ওয়েবসাইটে গিয়ে নিজের নিজের রোল নম্বর দিয়ে সফল হয়েছেন কি না, তা দেখতে পাবেন। অথচ নিয়ম অনুযায়ী, প্রার্থীদের টেট ও ইন্টারভিউয়ে প্রাপ্ত নম্বরের যাবতীয় তথ্য সমেত নাম, রোল নম্বর, পূর্ণাঙ্গ তালিকা প্রকাশ করার কথা পর্ষদের। উল্টে পর্ষদ পর পর দু'টি ছুটির দিনে সাতটি বিজ্ঞপ্তি প্রকাশ করেছে। যার মধ্যে পরস্পর-বিরোধিতা যেমন রয়েছে, তেমনই অস্বচ্ছতার অভিযোগ তোলার যথেষ্ট সুযোগ রয়েছে বলে আদালতে দাঁড়িয়ে সরব হন মামলাকারীদের আইনজীবীরা। মামলাকারীদের তরফে আইনজীবী বিকাশ ভট্টাচার্য ও ফিরদৌস শামিম আদালতকে জানান, পর্ষদের ওয়েবসাইটে গিয়ে কোনও প্রার্থী নয় সংখ্যার রোল নম্বর দিলে নিজের অবস্থান জানতে পারছেন। কিন্তু, সম্পূর্ণ মেধা তালিকা দেখার কোনও সুযোগ সেখানে রাখা হয়নি। অর্থাৎ, ইচ্ছাকৃতভাবে তা গোপন রাখা হয়েছে। সামগ্রিকভাবে কে বা কারা তালিকায় ঠাঁই পেলেন, তা জানতে দেওয়া হচ্ছে না।
যাদের কাছে নিয়োগপত্র পৌঁছেছে, সেগুলিও এখন কার্যকর হবে না বলেই জানিয়েছে আদালত। মামলার নিষ্পত্তি হওয়ার পরই পরবর্তী পদক্ষেপ করতে পারবে পর্ষদ। তারই প্রেক্ষিতে এই নির্দেশ বলে জানা গিয়েছে। চার সপ্তাহের মধ্যে এব্যাপারে আদালতে হলফনামা জমা দিতে বলেছেন বিচারপতি। আদালতের এই নির্দেশে বিধানসভা নির্বাচনের আগে নিয়োগপ্রক্রিয়া শেষ হওয়ার আর কোনও সম্ভাবনা রইল না। এর প্রভাব যে নির্বাচনের উপর পড়তে চলেছে তা আর বলার অপেক্ষা রাখেনা।
0 মন্তব্য(গুলি):
একটি মন্তব্য পোস্ট করুন