উৎসবের মরশুমের মাঝেই শিক্ষক নিয়োগ সংক্রান্ত নিয়ম বদল করল কেন্দ্র। শিক্ষক নিয়োগে বেশকিছু গুরুত্বপূর্ণ বদল আনল এনসিটিই। প্রাথমিক স্তরে শিক্ষক নিয়োগে একাধিক নিয়মে রদবদল করা হয়েছে বলে জানা গিয়েছে। এবার থেকে স্নাতক স্তরে ৫০ শতাংশ নম্বর না থাকলেও স্নাতকোত্তর স্তরে বি. এড সহ ৫৫ শতাংশ নম্বর থাকলে আবেদন করা যাবে প্রাথমিকের টেটে। এর পাশাপাশি, প্রথম থেকে পঞ্চম শ্রেণির এডুকেশন টিচার এবং শারীরশিক্ষার শিক্ষক পদে নিয়োগের জন্য স্নাতকোত্তরে ৫৫ % নম্বর এবং ৩ বছরের ইন্ট্রিগ্রেটেড বি.এড- এম. এড প্রশিক্ষণ থাকলেও আবেদন করা যাবে।
জানিয়েছে, ন্যাশনাল কাউন্সিল ফর টিচার এডুকেশন। এই প্রসঙ্গে বলে রাখা ভাল, পশ্চিমবঙ্গে আপাতত প্রথম থেকে অষ্টম শ্রেণি পর্যন্ত টেট নেওয়া হত, তবে এবার দ্বাদশ শ্রেণি পর্যন্ত টেট নেওয়ার বিষয়ে চিন্তাভাবনা করছে ন্যাশনাল কাউন্সিল ফর টিচার্স এডুকেশন (এনসিটিই)। ১৫ ফেব্রুয়ারির মধ্যে দেশের বিভিন্ন রাজ্য এবং কেন্দ্রশাসিত অঞ্চলগুলিকে প্রয়োজনীয় তথ্য পাঠানোর নির্দেশ দেওয়া হয়েছিল। তার ভিত্তিতে ৩১ মার্চের মধ্যে বিস্তারিত রিপোর্ট জমা দেয় এনসিটিই-গঠিত একটি কমিটি।
এতদিনে শিক্ষক নিয়োগের জন্য পশ্চিমবঙ্গে প্রথম থেকে অষ্টম শ্রেণি পর্যন্ত বাধ্যতামূলকভাবে (টিচার্স এলিজিবিলিটি টেস্ট) নেওয়া হয়। পঞ্চম শ্রেণি পর্যন্ত টেট নেওয়ার দায়িত্ব আছে প্রাথমিক শিক্ষা পর্ষদের হাতে। অষ্টম শ্রেণি পর্যন্ত টেট নেয় স্কুল সার্ভিস কমিশন (এসএসসি)।
এর আগে এই নিয়ম সংক্রান্ত বিষয়ে দু-বার সংশোধনী প্রকাশ করেছিল কেন্দ্র। ২০১৮–এর বিজ্ঞপ্তির সংশোধনীতে বলা হয়েছিল, প্রথম থেকে পঞ্চম শ্রেণি পর্যন্ত আগের যোগ্যতামান ছাড়াও কেউ যদি স্নাতক স্তরে নূন্যতম ৫০% নম্বর পান ও বি.এড. ডিগ্রিধারী হন, তাহলে তিনিও এই স্তরের শিক্ষকতার জন্য যোগ্য বলে বিবেচিত হবেন, কিন্তু তাঁকে চাকরি পাবার দু-বছরের মধ্যে ছয় মাসের এলিমেন্টারি এডুকেশন এ ব্রিজ কোর্স করে নিতে হবে। এরপর ২০১৯–এর সংশোধনীতে ষষ্ঠ থেকে নবম শ্রেণির জন্য বলা হয়, ন্যূনতম পঞ্চাশ শতাংশ নম্বর স্নাতক বা স্নাতকোত্তরের সঙ্গে বি.এড ডিগ্রি থাকতে হবে। যেটা বদলে ২০২১–এর সাম্প্রতিক সংশোধনীতে এসে যেটা বলা হল, স্নাতকোত্তরে নূন্যতম ৫৫% নম্বর ও তিন বছরের ইন্টিগ্রেটেড বি.এড. এম.এড কোর্স করা থাকলে প্রথম থেকে দ্বাদশ শ্রেণী পর্যন্ত শিক্ষকতার জন্য আবেদন করতে পারবেন। এবং নবম – দ্বাদশ শ্রেণী পর্যন্ত শিক্ষা বা শারীরশিক্ষার শিক্ষক হিসেবে যোগ্যতামান অর্জন করতে পারবেন।
হেডমিস্ট্রেসেস-এর সম্পাদক সৌদীপ্ত দাস বলেছেন "এই বিজ্ঞপ্তিকে স্বাগত। এর ফলে আরও বেশি সংখ্যক প্রার্থীর ক্ষেত্রে শিক্ষক নিয়োগের পরীক্ষায় বসবার সুযোগ মিলবে।" অল পোস্ট গ্র্যাজুয়েট টিচার্স ওয়েলফেয়ার অ্যাসোসিয়েশনের সম্পাদক চন্দন গরাই বলছেন, "সিদ্ধান্ত স্বাগত। চাকরিপ্রার্থীর সংখ্যা বাড়বে। তিন বছরের ইন্টিগ্রেটেড বিএড এম এড কোর্সের জন্য সারা দেশে পরিকাঠামা বৃদ্ধি করতে করতে হবে।" চাকরিপ্রার্থী সংগঠনের নেতৃত্ব সুশান্ত ঘোষের মতে,"এনসিটিই–র নিয়ম সংশোধনে বেশ কিছু সংশয় রয়েছে। সেই তিন বছরের ইন্টিগ্রেটেড বিএড, এমএড কোর্স এখনও সব রাজ্যে এবং এ রাজ্যেও চালু হয়নি। এ শুধু নিয়ম পরিবর্তন করার খেলা। নিয়ম মেনে প্রতি বছর টেট পরীক্ষা ও নিয়োগ হলে প্রার্থীরা বেশি উপকৃত হবেন।"
0 মন্তব্য(গুলি):
একটি মন্তব্য পোস্ট করুন