গঙ্গাসাগর সফরের দ্বিতীয় দিনে প্রশাসনিক বৈঠক সারলেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। তিনি এদিন গুরুত্বপূর্ণ কিছু ইঙ্গিত দিয়েছেন। যেমন কলকাতায় কন্টেনমেন্ট জোন চিহ্নিত করার কথা রয়েছে, তেমনই রয়েছে স্কুল-কলেজ বন্ধ করে দেওয়া-সহ লোকাল ট্রেনের সংখ্যা কমানো এবং বাড়ি থেকে কাজ করার নির্দেশিকার কথা। তবে সবটাই পর্যালোচনা করে দেখার পর সিদ্ধান্ত নেওয়ার কথা জানিয়েছেন মুখ্যমন্ত্রী।
বাইরে থেকে আসা বিমানযাত্রীদের থেকেই রাজ্যে করোনার প্রকোপ ফের বাড়ছে বলে মনে করেন মমতা। কাজেই আন্তর্জাতিক বিমানের ক্ষেত্রে ফের নিয়ন্ত্রণ আনা যায় কি না, তা নিয়ে ভাববে সরকার। এর পরেই মমতা প্রশাসনিক আধিকারিকদের উদ্দেশে বলেন, "বাইরে থেকে আসে কলকাতায় বেশি থাকেন। বাইরে যায়ও কলকাতার লোক বেশি। তাই কলকাতায় যদি কিছু কন্টেনমেন্ট জোন করতে হয়, দেখে নাও।" এর পাশাপাশি তিনি কলকাতা পুরসভার ওয়ার্ড ধরে ধরে সমীক্ষা করার নির্দেশ দিয়েছেন।
এর পাশাপাশি সাগরের প্রশাসনিক বৈঠকে আর কী বললেন মুখ্যমন্ত্রী?
মুখ্যমন্ত্রী বললেন, “ভূমি রাজস্ব দপ্তর ঘুঘুর বাসা। এই বাসা ভাঙতে হবে। আর এই বাসা ভাঙতে হবে আধিকারিকদের।" এর পরই 'দুয়ারে সরকার শিবিরে' জমি সংক্রান্ত সমস্যা-বিরোধের সমাধান করার নির্দেশ দেন মুখ্যমন্ত্রী।
মমতার নির্দেশ, গঙ্গাসাগর মেলা আরও সুশৃঙ্খল করতে হবে। আর তাই মেলার জন্য স্পেশ্যাল অফিসার নিয়োগ করলেন মুখ্যমন্ত্রী। সেই দায়িত্ব পালন করবেন সিআইডি এডিজি জ্ঞানবন্ত সিং। এছাড়াও রাজ্যের বিভিন্ন মন্ত্রীদের মেলা সংক্রান্ত যে দায়িত্ব দেওয়া হয়েছে তা আরও একবার মনে করিয়ে দেন তিনি।
সুন্দরবনের জন্য মাস্টার প্ল্যান আনছে রাজ্য সরকার। নীতি আয়োগে জমা পড়বে সেই প্ল্যান। তবে এ প্রসঙ্গে বলতে গিয়ে কেন্দ্রের বিরুদ্ধে ক্ষোভ উগরে দেন মুখ্যমন্ত্রী। বলেন, "ঘাটাল মাস্টার প্ল্যান জমা দিয়েছি। কিন্তু কেন্দ্র এখনও সেই সংক্রান্ত কোনও চিঠি দেয়নি।"
কুলতলিতে ত্রাস তৈরি করা রয়্যাল বেঙ্গলটিকে যারা ধরেছেন তাঁদের উচ্ছ্বসিত প্রশংসা করেন মুখ্যমন্ত্রী। বলেন, "আপনারা তো জীবন বাজি লাগিয়ে বাঘ ধরেছেন। খুব ভাল কাজ করেছেন।"
নোনাজমিতে জন্মানো স্বর্ণধানের বিপণীতে জোর দিলেন মুখ্যমন্ত্রী। পরামর্শ দিলেন, গঙ্গাসাগর মেলায় সেই ধানের অস্থায়ী বিপণী তৈরির। রাজ্যের বিভিন্ন প্রান্তে এধরনের বিপণী তৈরির পরামর্শ দিয়েছেন তিনি।
জয়নগরের মোয়া গোটা রাজ্যেই জনপ্রিয়। এবার সেই মোয়ার জিআই ট্যাগের জন্য আবেদন করছে রাজ্য। এমনকী, তালপাটালি-খেজুরের রসের জিআই ট্যাগের জন্যও আবেদন করতে পারে রাজ্য সরকার। এদিন সেকথা জানালেন খোদ মুখ্যমন্ত্রী।
করোনা সংক্রমণ বৃদ্ধি পেলে স্কুলগুলি বন্ধ করে দেওয়া হতে পারে। সেক্ষেত্রে নবম শ্রেণির পড়ুয়াদের বাড়ি-বাড়ি গিয়ে সবুজ সাথী সাইকেল পৌঁছে দেওয়ার নির্দেশ দিয়েছেন মুখ্যমন্ত্রী।
0 মন্তব্য(গুলি):
একটি মন্তব্য পোস্ট করুন