গতকাল রাজ্যে শিক্ষক নিয়োগের জন্য শূন্যপদ তৈরির বিজ্ঞপ্তিকে চোখে ধুলো দেওয়ার চেষ্টা বলে মন্তব্য করল কলকাতা হাইকোর্ট। শুক্রবার চাকরিপ্রার্থীদের এক আবেদনের ভিত্তিতে এই মন্তব্য করেন বিচারপতি। এর পাশাপাশি এই বিজ্ঞপ্তির মাধ্যমে রাজ্য সরকার শিক্ষক নিয়োগ দুর্নীতিতে তদন্ত বন্ধ করার চেষ্টা করছে। আদালতে বললেন চাকরিপ্রার্থীদের আইনজীবী।
এদিন চাকরিপ্রার্থীদের তরফে আদালতে জানানো হয়, 'চাকরিপ্রার্থীদের সঙ্গে প্রতারণা করার চেষ্টা করছে রাজ্য সরকার। নিয়োগের এই ধরণের বিজ্ঞপ্তি ভিত্তিহীন। মামলার ওপর চাকরির ভাগ্য নির্ধাণর করবে একথা কেন লেখা হয়েছে বিজ্ঞপ্তিতে? মামলাকারীদের চাকরি দিয়ে তদন্ত বন্ধ করতে চাইছে রাজ্য। ভুয়ো নিয়োগ বাতিল হলে বাকিরা এমনিতেই চাকরি পাবেন আদালতে মামলাকারীরা।
পালটা রাজ্যের তরফে জানানো হয়, 'র্যাঙ্ক জাম্প করার জন্য যারা চাকরি পাননি তাঁরা চাকরি পাবেন, রাজ্য।' দুপক্ষের বক্তব্য শুনে বিচারপতি বলেন, এই বিজ্ঞপ্তির মাধ্যমে চোখে ধুলো দেওয়ার চেষ্টা হচ্ছে।
প্রসঙ্গত, নিয়োগ ঘিরে বিতর্ক কিছুতেই পিছু ছাড়ছে না রাজ্যের। চলতে থাকা এই বিতর্কের মাঝেই বিজ্ঞপ্তি জারি স্কুল শিক্ষা দফতরের। ৬৮৬১ টি পদের বিজ্ঞপ্তি জারি। বিভিন্ন সময় দেখা গিয়েছে রিকমেন্ডেশন-এর ক্ষেত্রে র্যাঙ্ক জাম্প হয়েছে। তার জেরে এত সংখ্যক শূন্য-পদ তৈরি রাজ্যের। ১৯৩২টি পদ নবম দশম-এর জন্য, ২৪৭টি পদ একাদশ-দ্বাদশ এর জন্য, ১১০২টি পদ গ্রুপ সি ও ১৯৮০-টি পদ গ্রুপ ডি-এর জন্য। এর পাশাপাশি কর্মশিক্ষা ও শারীর শিক্ষার ক্ষেত্রেও পদ তৈরি করা হলো। ৭৫০ টি কর্মশিক্ষা ও ৮৫০ টি শারীর শিক্ষার-এর জন্য। রাজ্য মন্ত্রিসভায় আগেই সিদ্ধান্ত হয়েছিল, আজ তা বিজ্ঞপ্তি জারি করল স্কুল শিক্ষা দফতর। এক দিকে যেখানে সিবিআই তদন্ত চলছে এই র্যাঙ্ক জাম্প প্রসঙ্গকে কেন্দ্র করে, তার মধ্যেই স্কুল শিক্ষা দফতর বিজ্ঞপ্তি জারি বেশ তাৎপর্যপূর্ণ বলে মনে করছে বিশেষজ্ঞরা। যদিও এর আগেই ঘোষণা করা হয়, এসএসসি-তে ক্ষতিগ্রস্ত চাকরিপ্রার্থীদের পাশে দাঁড়াবে রাজ্য সরকার। মোট ৫২৬১টি শূন্যপদ তৈরি করে রাজ্য সরকার। তার সঙ্গে শারীরশিক্ষা ও কর্মশিক্ষার পদ যুক্ত হয়েছে। এই শূন্যপদগুলি ২০১৬-এ নিয়োগ প্রক্রিয়ার সময় তৈরি হওয়া প্যানেলগুলির জন্য তৈরি করেছে রাজ্য সরকার। অর্থাৎ যে পদগুলি নিয়ে নানা সময়ে দুর্নীতির অভিযোগ উঠেছে, সেগুলির ক্ষেত্রেই এই শূন্যপদ তৈরি করা হয়েছে।
0 মন্তব্য(গুলি):
একটি মন্তব্য পোস্ট করুন