পুলিশের চাকরির ইন্টারভিউয়ের আগেই কিছু পরীক্ষার্থীর হোয়াট্সঅ্যাপে পৌঁছেছিল গোপন কিছু তথ্য। কারা ইন্টারভিউ বোর্ডে থাকবেন, কারা প্রশ্ন করবেন, সেই তথ্য জানতে পেরেছিলেন কিছু পরীক্ষার্থী। মেধাতালিকা প্রকাশের পরেও দেখা যায় বেশ কিছু অনিয়ম রয়েছে। সেই অনিয়মের অভিযোগ এনেই কলকাতা হাই কোর্টের দ্বারস্থ হয়েছিলেন পুলিশ কনস্টেবল পদের কিছু চাকরিপ্রার্থী।
মামলাকারীদের দাবি ছিল, যে হেতু পুলিশে নিয়োগের চাকরিতে দুর্নীতি হয়েছে, তাই গোটা নিয়োগ প্রক্রিয়াটাই খারিজ করতে হবে। পাশাপাশি, সংরক্ষিত চাকরিপ্রার্থীদের জন্য আলাদা তালিকাও প্রকাশ করতে হবে। মামলাকারী সম্পদ মণ্ডল-সহ কয়েকশো চাকরিপ্রার্থী ২০২২ সালের ফেব্রুয়ারি মাসে রুজু করেন এই মামলা। বুধবার তার রায় ঘোষণা করে হাই কোর্টের প্রধান বিচারপতি টিএস শিবজ্ঞানম এবং বিচারপতি হিরণ্ময় ভট্টাচার্যের ডিভিশন বেঞ্চ।
২০১৯ সালে শুরু হওয়া এই নিয়োগ প্রক্রিয়ায় মোট দু-টি মেধাতালিকা প্রকাশ করা হয়েছিল। এর মধ্যে প্রথম মেধাতালিকাটি প্রকাশ করা হয় ২০২১ সালের ২৬ মার্চ। যা নিয়ে আপত্তি তুলেছিলেন মামলাকারীরা। পুলিশ রিক্রুটমেন্ট বোর্ডের বিরুদ্ধে তারা মামলা করেন ওয়েস্ট বেঙ্গল অ্যাডমিনিস্ট্রেটিভ ট্রাইবুনালে। ট্রাইবুনাল পুলিশ কনস্টেবলদের নিয়োগ সংক্রান্ত ত্রুটি শুধরানোর নির্দেশ দিয়েছিল ওয়েস্ট বেঙ্গল পুলিশ রিক্রুটমেন্ট বোর্ডকে। এর পরেই প্রকাশিত হয় দ্বিতীয় মেধা তালিকা। ২০২২ সালের ২৪ ফেব্রুয়ারি সংরক্ষণের নিয়ম মেনে সেই তালিকা প্রকাশ করা হয়। নতুন করে চাকরিও পান অনেকে। কিন্তু বুধবার কলকাতা হাই কোর্ট এই দ্বিতীয় তালিকাটি খারিজ করে প্রথম তালিকাটিকেই মান্যতা দিয়েছে। একই সঙ্গে এ ব্যাপারে স্যাট বা স্টেট অ্যাডমিনিস্ট্রেটিভ ট্রাইবুনাল যে নির্দেশ দিয়েছিল, তা-ও খারিজ করেছে।
বোর্ডের যুক্তি ছিল, নিয়োগে সংরক্ষণ নীতি মানা হয়েছে। কিন্তু যে সব সংরক্ষিত প্রার্থী সাধারণ প্রার্থীর সমতুল্য এবং বেশি নম্বর পাবেন মেধাতালিকায় তাঁদের সাধারণ প্রার্থী হিসাবেই গণ্য করা হবে। কিন্তু বোর্ডের ওই প্যানেল বাতিল করে দেয় স্যাট। তারা জানায়, সাধারণ এবং সংরক্ষিত প্রার্থীদের আলাদা ভাবে নতুন প্যানেল প্রকাশ করে নিয়োগ করতে হবে। এর পরে স্যাটের রায় মেনে কনস্টেবল পদে ক্যাটাগরি ভাগ করে চাকরি দেয় বোর্ড। সাধারণ এবং সংরক্ষিতদের জন্য আলাদা মেধাতালিকার ভিত্তিতে পুলিশের কনস্টেবল পদে চাকরি দেওয়া হয়। ফলে চাকরিতে বেশি সংখ্যক সাধারণ প্রার্থী সুযোগ পান। কিন্তু বুধবার হাই কোর্ট স্যাটের ওই রায়কে খারিজ করে দিল। পুরনো প্যানেলই বহাল রাখল হাই কোর্ট।
0 মন্তব্য(গুলি):
একটি মন্তব্য পোস্ট করুন