আরজিকরের নির্যাতিতা ডাক্তারের বাবার সাম্প্রতিক চাঞ্চল্যকর অভিযোগের পরিপ্রেক্ষিতে তাঁকে আইনি নোটিস পাঠালেন কুণাল ঘোষ। গত ৯ আগস্ট বিজেপির নেতৃত্বাধীন নবান্ন অভিযানের মিছিল থেকে তিনি রাজ্য সরকার ও সিবিআইকে জড়িয়ে তাঁর বিরুদ্ধে গুরুতর অভিযোগ করেছেন। সেই অভিযোগের পালটা কুণালের এই নোটিস। অভয়ার বাবার অভিযোগে তীব্র প্রতিক্রিয়া জানিয়েছেন তৃণমূল কংগ্রেসের রাজ্য সাধারণ সম্পাদক। গত শনিবার নবান্ন অভিযানের মিছিল ‘চূড়ান্ত ফ্লপ’ হওয়ার পর সংবাদমাধ্যমকে অভয়ার বাবা বলেন, "সিবিআই টাকা খেয়ে তদন্ত নষ্ট করেছে। রাজ্য সরকার টাকা দিয়েছে। কুণাল ঘোষ সিজিওতে গিয়ে সেটল করেছে।" এমনই আপত্তিকর মন্তব্যের প্রতিবাদ জানিয়ে কুণালের আইনজীবী অয়ন চক্রবর্তী মঙ্গলবার আইনি নোটিস পাঠিয়েছেন অভয়ার বাবাকে। এক প্রশ্নের উত্তরে অয়ন জানিয়েছেন, "চিঠি পাওয়ার চারদিনের মধ্যে উনি যদি সাংবাদিক বৈঠক করে ক্ষমা না চান, তা হলে পরবর্তী আইনি পদক্ষেপ নেওয়া হবে।"
মঙ্গলবার, ১২ আগস্ট, ২০২৫
'কেন এত নেতা খুন হচ্ছেন?' পুলিশের উপর ক্ষুব্ধ মুখ্যমন্ত্রী
কেন এত নেতা খুন হচ্ছেন? ‘আমাদের পাড়া আমাদের সমাধান’ নিয়ে বৈঠকে ক্ষোভ প্রকাশ মুখ্যমন্ত্রী তথা তৃণমূল নেত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের। পুলিশ সুপার, আইসি, ওসিদের নিজেদের এলাকা দায়িত্ব সহকারে দেখার নির্দেশ। কোনও পুলিশ অফিসারের নাম না করে এমন কড়া নির্দেশ মুখ্যমন্ত্রীর। গত কয়েক দিন ধরে বেশ কিছু জেলায় খুন হয়েছেন একাধিক শাসক দলের নেতা। সেই আবহে মুখ্যমন্ত্রীর এই নির্দেশ যথেষ্ট তাৎপর্যপূর্ণ বলেই মতা রাজনৈতিক মহলের। মমতার সাফ কথা, থানার ভূমিকা ভাল করে দেখতে হবে। আইবি কেন আগে থেকে খবর পাচ্ছে না? প্রশ্ন মমতার। এরপরই রীতিমতো ক্ষোভের সুরে বলেন, দায়িত্ব নিয়ে বসে থাকলাম, কাজ করলাম না সেটা করলে হবে না। সূত্রের খবর, বৈঠকে উপস্থিতি ছিলেন জেলাশাসক এবং বিভিন্ন জেলার এসপি থেকে শুরু করে কমিশনারেটের সিপিরা।
নির্বাচন কমিশনের বড় সিদ্ধান্ত; বঙ্গে ১২ টি রাজনৈতিক দলকে বাতিলের সিদ্ধান্ত
সামনে ভোট। আর তার আগেই গুরুত্বপূর্ণ ঘোষণা করে দিল নির্বাচন কমিশন। ১২টা রাজনৈতিক দলকে এ রাজ্যে বাতিল ঘোষণা কমিশনের। তা নিয়েই পুরোদমে চর্চা শুরু হয়ে গিয়েছে রাজনৈতিক মহলে। কমিশন বলছে, এই দলগুলি গত ৬ বছর ভোটে লড়েনি। ফলে রাজনৈতিক আঙিনায় এখন তাদের কোনও অস্তিত্ব নেই। সে কারমেই এবার তাঁদের বাতিল করা হল। ফলে তারা আর ভোটে লড়তে পারবে না। দিতে পারবে না কোনও প্রার্থী। ১. আম্বেদকরবাদী পার্টি ২.গ্লোবাল পিপল পিস পার্টি ৩. গোরখা ন্য়াশনাল লিবারেশন ফ্রন্ট ৪. কামতাপুর প্রগ্রেসিভ পার্টি ৫. মাই হি ভারত ৬. ন্যাশনাল কনফেডেরেসি অফ ইন্ডিয়া (National Confederacy of India) ৭. ন্যাশনালিস্ট তৃণমূল কংগ্রেস পার্টি ৮. নির্যাতিতা সমাজ বিপ্লবী পার্টি ৯. পার্বত্য প্রজাতান্ত্রিক পার্টি
১০. পশ্চিমবঙ্গ রাজ্য মুসলিম লীগ ১১. Right Party of India ১২. The Religion of Man Revolving Political Party of India
"নাগরিকত্বের প্রমাণপত্র নয় আধার"; কমিশনের অবস্থানে সায় সুপ্রিম কোর্টের
আধার কার্ড নাগরিকত্বের চূড়ান্ত প্রমাণপত্র হতে পারে না! এবার নির্বাচন কমিশনের সিদ্ধান্তেই কার্যত মেনেনিল সুপ্রিম কোর্ট। শীর্ষ আদালত জানিয়ে দিল, আধার কার্ড কেবলই পরিচয়পত্র। সেটা নাগরিকত্বের চূড়ান্ত প্রমাণপত্র হতে পারে না। কমিশন যে সিদ্ধান্ত নিয়ছে সেটাই সঠিক। বিহারের স্পেশ্যাল ইনটেনসিভ রিভিশন নিয়ে একাধিক মামলা দায়ের হয়েছে সুপ্রিম কোর্টে। এই সংক্রান্ত একটি মামলার শুনানিতে বিচারপতি সূর্য কান্তর নেতৃত্বাধীন ডিভিশন বেঞ্চ জানিয়ে দিল,"নির্বাচন কমিশনই ঠিক। আধারকে নাগরিকত্বের চূড়ান্ত প্রমাণপত্র হিসাবে গ্রহণ করা যায় না। এটা যাচাই করার প্রয়োজন পড়ে।" ঘটনাচক্রে এই সুপ্রিম কোর্টই সম্প্রতি বিহারের নিবিড় সংশোধনে আধার কার্ড যোগ করার পরামর্শ দিয়েছিল নির্বাচন কমিশনকে। কিন্তু কমিশন সেই পরামর্শ খারিজ করে জানিয়ে দিয়েছে, বিশেষ নিবিড় সংশোধনে আধার কার্ড বা ভোটার কার্ড গ্রহণ করা যাবে না। বিহারের SIR-এর জন্য নাগরিকত্বের প্রমাণপত্র হিসাবে মোট ১১টি নথির তালিকা দিয়েছে কমিশন। কিন্তু অনেক ভোটারের কাছে এই ১১ নথির কোনওটিই নেই। সেইসব ভোটারদের আবার অধিকাংশই প্রান্তিক, দরিদ্র। এদের মধ্যে অনেকের নামই ভোটার তালিকা থেকে বাদ পড়েছে ওই ১১টি নথি না থাকায়। ওই প্রান্তিক ভোটারদের কথা ভেবেই অতীতে সুপ্রিম কোর্ট কমিশনকে আধার কার্ড, ভোটার কার্ড এবং রেশন কার্ডকে SIR-এর প্রামাণ্য নথির তালিকায় যোগ করতে বলেছিল। কিন্তু এবার সেই সুপ্রিম কোর্টই কমিশনের সিদ্ধান্তকে সমর্থন করে বলে দিল, কমিশনই ঠিক। আধার কার্ড থাকলেই কাউকে নিশ্চিতভাবে ভারতের নাগরিক বলা যায় না। অন্যদিকে আধার ও ভোটার কার্ড নিয়ে পুরনো প্রশ্ন থেকেই যাচ্ছে, যদি আধার বা ভোটার কার্ড প্রাথমিক পরিচয়পত্র না হয় তবে ভারতের নাগরিকত্বের প্রমাণপত্র কোনটি? তা কি জন্মের শংসাপত্র? সেক্ষেত্রে একজন নাগরিকের অন্যতম অধিকার ভোটদানে ভোটার কার্ড কীভাবে গ্রহণযোগ্য হয়? পাশাপাশি রাষ্ট্রের দেওয়া খাদ্যপণ্য পেতেও (রেশন ব্যবস্থা) রেশন কার্ডের সঙ্গে আধার কার্ড সংযুক্ত করতে হচ্ছে। আধার যদি প্রাথমিক পরিচয়পত্র না-ই হয়, তবে এর পিছনে যুক্তিই বা কী? আধার ও ভোটার যদি নাগরিকের প্রাথমিক পরিচয়পত্রের মধ্যে না পড়ে, তবে ভোটার কার্ড-আধার কার্ড সংযুক্তকরণের প্রয়োজনটাই বা কী? বিশেষজ্ঞদের বক্তব্য, এখনও পর্যন্ত এই বিভ্রান্তি দূর করতে পারেনি কেন্দ্রের বিজেপি সরকার।
ওবিসি মামলা নিয়ে রাজ্যের দ্রুত শুনানির আর্জি মানল না সুপ্রিম কোর্ট!
অন্যান্য অনগ্রসর শ্রেণির (ওবিসি) শংসাপত্রের বিজ্ঞপ্তি সংক্রান্ত মামলায় কলকাতা হাই কোর্টের নির্দেশকে চ্যালেঞ্জ করে সুপ্রিম কোর্টে প্রধান বিচারপতির দৃষ্টি আকর্ষণ করেছিল রাজ্য সরকার। রাজ্যের তরফে দ্রুত এই মামলার শুনানির আবেদন জানানো হয়েছিল। সেই আর্জি শুনলেন না প্রধান বিচারপতি বিআর গবই। এক মাস পর নির্ধারিত দিনেই ওই মামলার শুনানি হবে বলে জানানো হয়েছে। সোমবার সুপ্রিম কোর্টে ওবিসি মামলার শুনানি হওয়ার কথা থাকলেও সময়ের অভাবে তা হয়নি। পরে জানা যায়, শুনানি এক মাস পিছিয়ে গিয়েছে। এর পরেই ওবিসি জট নিয়ে প্রধান বিচারপতির দৃষ্টি আকর্ষণ করে শীর্ষ আদালতের দ্বারস্থ হয় রাজ্য। সোমবার সুপ্রিম কোর্টে রাজ্যের আইনজীবী জানান, ওবিসি সংক্রান্ত বিজ্ঞপ্তি নিয়ে সম্প্রতি একাধিক জটিলতা তৈরি হয়েছে। একের পর এক নির্দেশ দিচ্ছে কলকাতা হাই কোর্ট। যার জেরে দ্রুত এই মামলার শুনানি করা হোক। রাজ্যের আইনজীবীর আর্জি ছিল, আগামী বৃহস্পতিবার অথবা সোমবার মামলার শুনানি করা হোক। কিন্তু সেই আর্জি শোনেননি প্রধান বিচারপতি। তিনি জানিয়েছেন, ওই মামলা তালিকা থেকে বাদ যাবে না। নতুন করে তালিকাও তৈরি করা হবে না। অর্থাৎ, নির্দিষ্ট দিনেই ওই মামলা শুনানির জন্য উঠবে। সুপ্রিম কোর্ট সূত্রে খবর, আগামী ৯ সেপ্টেম্বর ওবিসি মামলার শুনানি হতে পারে।
সোমবার, ১১ আগস্ট, ২০২৫
২০২৬-এ ভাঙছে বাম- কংগ্রেস জোট?
দিল্লিতে ক্রমশই দূরত্ব কমছে কংগ্রেসের। ভোটার তালিকা সংশোধন থেকে শুরু করে জাতীয় স্তরে একাধিক ইস্যুতে একজোট হয়ে কেন্দ্রীয় সরকারের বিরুদ্ধে সরব হচ্ছে বিরোধী শিবিরের দুই দলকে। সোমবারও দিল্লিতে নির্বাচন কমিশন ঘেরাও করতে গিয়ে পুলিশের সঙ্গে ধস্তাধস্তিতে অসুস্থ তৃণমূল সাংসদদের সাহায্য করতে দেখা যায় কংগ্রেস নেতা রাহুল গান্ধিকে। জাতীয় স্তরে কংগ্রেস-তৃণমূল দূরত্ব কমায় কি আগামী বছর বিধানসভা নির্বাচনে রাজ্যে একজোট হয়ে লড়াই করতে দেখা যাবে দুই পুরোন শরিককে? ২০২১ এবং ২০২৪ সালের বিপর্যয়ের পর কি রাজ্যে ভেঙে যাবে বাম-কংগ্রেস জোট? এখন রাজনৈতিক মহলে এই খবর নিয়ে চর্চা চলছে। প্রদেশ কংগ্রেস সভাপতি শুভঙ্কর সরকার যা ইঙ্গিত দিলেন, তাতে ২০২৬ সালে কংগ্রেস যে বামেদের হাত ছাড়ছে তা প্রায় নিশ্চিত। কিন্তু কংগ্রেস রাজ্যে তৃণমূলের হাত ধরবে, এমন কোনও সম্ভাবনার কথাও বলেননি প্রদেশ কংগ্রেস সভাপতি। বরং তাঁর দাবি অনুযায়ী, রাজ্যের ২৯৪টি আসনে একাই লড়ার জন্য প্রস্তুত হচ্ছে কংগ্রেস। ২০২৬ সালের জোট সম্ভাবনা নিয়ে শুভঙ্কর সরকার এ দিন বলেন, 'বাংলার মানুষ চায় কংগ্রেস প্রতীকে দাঁড়াবে। পরে পরিবর্তিত পরিস্থিতিতে হাই কমান্ডের ও নির্দেশ অনুযায়ী আমরা চলবো। বিজেপি কে ঠেকাতে কংগ্রেস লড়াই করবে। জোটের কথা ভাবছেন কেন? কংগ্রেস ২৯৪ টা তেই লড়াই করবে। কংগ্রেসকে বাংলার মানুষ চাইছে।'
কমিশন অভিযানে গরহাজির অভিষেক-কল্যাণ!
ভোটার তালিকায় বিশেষ নিবিড় সমীক্ষা (এসআইআর) ঘিরে বিতর্ক চলছে গোটা দেশ জুড়ে। এমন আবহে গত ২১ জুলাইয়ের সভামঞ্চ থেকে তৃণমূলনেত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় হুঁশিয়ারি দিয়েছিলেন, প্রয়োজনে নির্বাচন কমিশন ঘেরাও হবে। সোমবার বিরোধী দলগুলির প্রায় ২০০ সাংসদ নির্বাচন কমিশন অভিযানে গিয়ে দিল্লি পুলিশের সঙ্গে সংঘাতে জড়িয়েছেন। কিন্তু সেই কর্মসূচিতে উল্লেখযোগ্য ভাবে গরহাজির রইলেন লোকসভায় তৃণমূলের দলনেতা অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায় এবং শ্রীরামপুরের তৃণমূল সাংসদ কল্যাণ বন্দ্যোপাধ্যায়। অভিষেক রয়েছেন কলকাতায়। তিনি দলীয় সাংগঠনিক বৈঠকে ব্যস্ত ছিলেন বলে জানা গিয়েছে। আর কল্যাণ এসআইআর নিয়েই মামলার শুনানিতে ছিলেন সুপ্রিম কোর্টে। গত সোমবার সাংসদদের সঙ্গে ভার্চুয়াল বৈঠক করে অসুস্থ সুদীপ বন্দ্যোপাধ্যায়ের জায়গায় অভিষেককে লোকসভার দলনেতার দায়িত্ব দিয়েছিলেন মমতা। ওই বৈঠকের পরেই লোকসভায় তৃণমূলের মুখ্যসচেতক পদ থেকে ইস্তফা দিয়েছিলেন কল্যাণ। মঙ্গলবারই তা গৃহীত হয়। তার পর কাকলি ঘোষ দস্তিদারকে মুখ্যসচেতক এবং শতাব্দী রায়কে লোকসভার সংসদীয় দলের উপদলনেতা ঘোষণা করে তৃণমূল। সোমবারের কর্মসূচিতে হাজির না-থাকা প্রসঙ্গে কল্যাণ বলেন, "দিদি জানেন, পুরোটা জানেন। এসআইআর নিয়ে পার্টি যে মামলা করেছে, সেই কাজেই আমি সুপ্রিম কোর্টে ব্যস্ত ছিলাম।" আর অভিষেক ক্যামাক স্ট্রিটে নিজের দফতরে দলের উত্তর দিনাজপুর এবং বহরমপুর সাংগঠনিক জেলার নেতৃত্বকে নিয়ে বৈঠক করেছেন। সেখানে ছিলেন দলের রাজ্য সভাপতি তথা রাজ্যসভার সাংসদ সুব্রত বক্সীও।