উচ্চ প্রাথমিকে নিয়োগ প্রক্রিয়া আগেই বাতিল করেছে কলকাতা হাইকোর্ট। বিচারপতি মৌসুমি ভট্টাচার্য শুক্রবার জানিয়ে দিয়েছেন ,"নিয়োগ প্রক্রিয়া আইন মেনে হয়নি। পুরো প্রক্রিয়াই অনিয়মে ভরা। প্যানেল থেকে মেরিট লিস্ট, পুরো তালিকাই বাতিল"। আদালতের এই রায়ে বড়সড় ধাক্কা খেয়েছে রাজ্য সরকার। কাজেই SSC-র নিয়ম মোতাবেক ফের নিয়োগ প্রক্রিয়া শুরু করতে হবে। এ বিষয়ে হাইকোর্টের স্পষ্ট নির্দেশ, কাউন্সেলিং, ডকুমেন্ট জমা দেওয়ার কাজ শুরু করতে হবে ৪ জানুযারির মধ্যেই। ৫ ই এপ্রিলের মধ্যে শেষ করতে হবে ভেরিফিকেশন। মেধাতালিকা প্রকাশ করতে হবে ১০ মে-র মধ্যে।
আপাতত উচ্চপ্রাথমিক শিক্ষক নিয়োগ নিয়ে নতুন কোনও মামলার পথে যাচ্ছে না রাজ্য সরকার। হাইকোর্টের রায়কে চ্যালেঞ্জ জানিয়ে আপাতত ডিভিশন বেঞ্চে না যাওয়ার সিদ্ধান্ত। আপারের রায় নিয়ে রাজ্যের পরবর্তী অবস্থান এবং পদক্ষেপ কী হবে তা নিয়েই দু-দিন আগে আলোচনায় বসেছিল রাজ্য-স্কুল সার্ভিস কমিশন। একইসঙ্গে আইনজীবীদের সঙ্গেও আলোচনা হয় বলে জানা গিয়েছে। তারপরই সিদ্ধান্ত নেওয়া হয় আপাতত ডিভিশন বেঞ্চে নতুন করে এই রায় নিয়ে কোনও আপিল করার পথে যাচ্ছে না স্কুল সার্ভিস কমিশন। সিঙ্গল বেঞ্চের রায়কে মান্যতা দিয়েই ৪ জানুয়ারি থেকেই ভেরিফিকেশন শুরু করতে চলেছে কমিশন। শিক্ষামন্ত্রী পার্থ চট্টোপাধ্যায় সঙ্গে বৈঠকে বসেন এসএসসির আধিকারিকরা।
প্রসঙ্গত, আদালত যে-সব প্রার্থীর মেধা-তালিকা নতুন ভাবে তৈরি করে ৩১ জুলাইয়ের মধ্যে নিয়োগ প্রক্রিয়া শেষ করার নির্দেশ দিয়েছে, তাঁরা টেট দিয়েছেন ২০১৫ সালে। তারও বছর তিনেক আগে, ২০১২ সালে যাঁরা উচ্চ প্রাথমিকে নিয়োগের প্রথম পরীক্ষা দেন, সেই প্রার্থীদের দাবি, তাঁরা পাশ করেছেন আগে। তাই স্কুলে নিয়োগের ক্ষেত্রে অগ্রাধিকার দিতে হবে তাঁদেরই। অন্য একটি মামলায় হাইকোর্টের নির্দেশের প্রেক্ষিতে ওই প্রার্থীদের সেই পরীক্ষাই প্রথম টেট হিসেবে গণ্য। উচ্চ প্রাথমিকে নিয়োগের প্রথম পরীক্ষায় যাঁরা পাশ করেন, সেই শিক্ষকপদ প্রার্থীদের অভিযোগ, উত্তীর্ণ হয়েও দীর্ঘ প্রায় ন’বছর ধরে তাঁরা বঞ্চনার শিকার। এ বার নতুন প্যানেল তৈরি করে নিয়োগের ক্ষেত্রে আগে তাঁরা সুযোগ না-পেলে তাঁদের আবার বঞ্চনার শিকার হতে হবে।
রাজ্য সরকার ২০১২ সালের টেট-কে প্রথমে উচ্চ প্রাথমিকের নিয়োগের পরীক্ষা হিসেবে প্রথমে মান্যতা দেয়নি। স্কুল সার্ভিস কমিশন বা এসএসসি তখন জানিয়েছিল, ওটা উচ্চ প্রাথমিকে শিক্ষক নিয়োগের জন্য প্রাথমিক বাছাই মাত্র। কিন্তু পরবর্তী কালে সংশ্লিষ্ট প্রার্থীরা হাইকোর্টে মামলা করেন। উচ্চ আদালত সেই পরীক্ষাকে উচ্চ প্রাথমিকে শিক্ষক নিয়োগের পরীক্ষা (টেট) হিসেবে মান্যতা দেয়। একই সঙ্গে আদালত জানায়, ২০১২ সালের পরীক্ষাকে টেট বলেই গণ্য করতে হবে। পরে তাতে পাশ করা প্রার্থীদের টেট-উত্তীর্ণের সার্টিফিকেটও দেয় রাজ্য সরকার।
0 মন্তব্য(গুলি):
একটি মন্তব্য পোস্ট করুন