উপনির্বাচনের জন্য বদলাতে পারে উচ্চমাধ্যমিক পরীক্ষার দিন। বিধানসভায় এমনই ইঙ্গিত দিলেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। তিনি জানিয়েছেন, দুই কেন্দ্রের ভোট পিছিয়ে দেওয়ার চেষ্টা করছে রাজ্য। ভোট পিছিয়ে দেওয়া সম্ভব না হলে পরীক্ষার দিন বদল হতে পারে। এ প্রসঙ্গে এদিন বিধানসভায় মুখ্যমন্ত্রী জানান, পরীক্ষার মধ্যেই উপনির্বাচন রয়েছে। ভোট পিছিয়ে দেওয়ার চেষ্টা করছে রাজ্য। তা করা না গেলে উচ্চমাধ্যমিক পরীক্ষার দিন বদল হতে পারে। ভোটের আবহে কীভাবে পরীক্ষা হবে, তা নিয়ে ইতিমধ্যেই একদফা বৈঠক করেছে উচ্চমাধ্যমিক শিক্ষা সংসদ।
প্রসঙ্গত, বিতর্ক বাড়িয়ে ফের রাজ্যে নির্বাচন। আসানসোল লোকসভা এবং বালিগঞ্জ বিধানসভা কেন্দ্রে ১২ এপ্রিল উপ নির্বাচন হতে চলেছে। যদিও ওই সময়ই হবে উচ্চ মাধ্যমিক পরীক্ষা। কিন্তু উপ নির্বাচনের সঙ্গে পরীক্ষা নেওয়া কতটা সম্ভব? সেই প্রশ্ন কিন্তু উঠতে শুরু করেছে রাজ্যে। নির্বাচন কমিশন সূত্রে পাওয়া খবর, বদলাচ্ছে না ভোটের নির্ধারিত দিন। শুধু তাই নয়, সর্বভারতীয় জয়েন্ট মেইনের দিনেই পড়েছে উচ্চ মাধ্যমিকের স্ট্যাটিসটিক্স পরীক্ষা। ফলে ঘোর সঙ্কটে পরীক্ষার্থীরা। তাহলে কি ফের উচ্চ মাধ্যমিক পরীক্ষার সূচি পরিবর্তন? তেমনই ইঙ্গিত মিলেছে প্রসাশনের তরফে।
ইতিমধ্যে মুখ্য নির্বাচনী আধিকারিককে উপ নির্বাচনের দিন বদলের জন্য সোমবার চিঠি পাঠিয়ে অনুরোধ করেছিল রাজ্য স্বরাষ্ট্র দফতর। সূত্রের খবর, উপ নির্বাচনের নির্ঘণ্ট পরিবর্তনের বিষয়ে রাজ্যের আর্জির উত্তর আজ, বুধবার দেবে নির্বাচন কমিশন। ১২ এপ্রিল উচ্চ মাধ্যমিক নেই ঠিকই, তবে পরীক্ষা রয়েছে ১১ ও ১৩ এপ্রিল। অথচ, অধিকাংশ বুথের আয়োজনই হচ্ছে স্কুলে। পরীক্ষা চললে স্কুলগুলিকে বুথ হিসেবে ব্যবহার করা কোনওমতেই সম্ভব নয়। কারণ, অন্তত দু-দিন আগেই ভোটের জন্য স্কুলগুলিকে নিয়ে নেয় নির্বাচন কমিশন।
কোনও লোকসভা বা বিধানসভা আসন খালি হলে সংবিধান অনুযায়ী ছ-মাসের মধ্যে সেরে ফেলতে হয় নির্বাচন প্রক্রিয়া। আসানসোল লোকসভা কেন্দ্রে বাবুল সুপ্রিয় সাংসদ পদে ইস্তফা দিয়েছিলেন ২২ অক্টোবর। তাই ওই লোকসভা কেন্দ্রে নির্বাচন করাতে হবে ১৮ এপ্রিলের মধ্যে। অন্যদিকে সুব্রত মুখোপাধ্যায়ের মৃত্যু হয় ৪ নভেম্বর। অর্থাৎ, বালিগঞ্জ কেন্দ্রের ক্ষেত্রেও নির্বাচন প্রক্রিয়া শেষ করতে হবে মে মাসের মধ্যে। বিশেষ কিছু ক্ষেত্রে ছ’মাসের পরও পিছনো যেতে পারে নির্বাচন। যেমন আইন-শৃঙ্খলা জনিত সমস্যা। তবে এ ক্ষেত্রে সমস্যাটা একেবারেই আলাদা—উচ্চ মাধ্যমিক পরীক্ষা।
উচ্চ মাধ্যমিক শিক্ষা সংসদের সভাপতি চিরঞ্জীব ভট্টাচার্য বলেন, নির্বাচনের দিন পরিবর্তন হচ্ছে না শুনেছি। ২৫ এপ্রিল জেইই-মেইনের সঙ্গে স্ট্যাটিসটিক্স পরীক্ষাও রয়েছে। তবে, এখনই সূচি বদলের বিষয়ে কোনও সিদ্ধান্ত হয়নি। সরকার এবং প্রশাসন যা বলবে, সেই অনুযায়ী সিদ্ধান্ত নেব। এদিকে শিক্ষাদপ্তর সূত্রে খবর, ফের উচ্চ মাধ্যমিকের সূচি বদলের জন্য নবান্নের সঙ্গে কথা বলবে তারা। কারণ, সূচি বদল না হলে ভোটের জন্য নির্বিঘ্নে পরীক্ষার আয়োজন অসম্ভব। আর তা ছাড়াও স্ট্যাটিস্টিক্স পরীক্ষার দিন জয়েন্ট মেইন পড়ে যাওয়ায় বহু ছাত্রছাত্রী বঞ্চিত হবে। সবই মাথায় রেখে এগতে হচ্ছে রাজ্যকে। অন্যদিকে, জয়েন্ট মেইনের সূচি ন্যাশনাল টেস্টিং এজেন্সি ফের বদল করে কি না, লক্ষ্য রাখতে হচ্ছে সে দিকেও। কারণ, জয়েন্ট মেইন পরীক্ষার সঙ্গে দ্বাদশ শ্রেণির আইএসসি পরীক্ষার দু-টি দিন মিলে গিয়েছে। ২৫ এপ্রিল রয়েছে ইংরেজি পরীক্ষা, আর ৪ মে আইএসসির একাধিক ভাষাপত্র। এর মধ্যেও অনেক জয়েন্ট পরীক্ষার্থী থাকতে পারেন। ফলে সূচি ফের বদলের সম্ভাবনা প্রবল। অতএব, জটিলতা এই ইস্যুতেও।
0 মন্তব্য(গুলি):
একটি মন্তব্য পোস্ট করুন