গতকাল ভুবনেশ্বর থেকে উড়িয়ে আনার পর সল্টলেকের সিজিও কমপ্লেক্সে পার্থ চট্টোপাধ্যায় ও তার সহযোগী অর্পিতা মুখোপাধ্যায়কে জেরা করছে ইডি। অর্পিতা সেই জেরায় সহযোগিতা করলেও পার্থ তা করছেন না বলে ইডি সূত্রে খবর। ফলে দুজনকে মুখোমুখি বসিয়ে জেরার সম্ভাবনা বাড়ছে বলে মনে করা হচ্ছে। মঙ্গলবার সকাল সাড়ে নটা থেকে টানা জেরা করা হচ্ছে পার্থ ও অর্পিতাকে। ইডির কনফারেন্স রুমে একটি অস্থায়ী লকআপ তৈরি করে সেখানেই জেরা চলছে পার্থক। অন্যদিকে, ইডির যে লকআপ রয়েছে সেখানেই জেরা করা হচ্ছে অর্পিতাকে।
ইডি সূত্রে খবর, আজকের জেরায় সহযোগিতা করছেন অর্পিতা। তার কাছ থেকে বেশকিছু গুরুত্বপূর্ণ তথ্য পেয়েছে কেন্দ্রীয় তদন্ত সংস্থা। তবে পার্থ চট্টোপাধ্যায় বেশকিছু প্রশ্নের উত্তর এড়িয়ে গিয়েছেন বলেই জানা যাচ্ছে। ডায়মন্ড সিটির অর্পিতা মুখোপাধ্যায়ের ফ্ল্যাট থেকে উদ্ধার হয়েছে ২১ কোটি ৯০ লাখ টাকা। সেই টাকার উত্স কী? ওই টাকার সঙ্গে পার্থ চট্টোপাধ্যায়ের সম্পর্ক কোথায়, এটাই এখন ইডির কাছে মূল প্রশ্ন। এ ব্যাপারে বেশকিছু গুরুত্বপূর্ণ তথ্য অর্পিতা দিয়েছেন বলে খবর।
প্রসঙ্গত, অর্পিতা মুখোপাধ্যায়ের ফ্ল্যাটে উদ্ধার হওয়া 'কালো ডায়েরি' ঘিরে ক্রমশ রহস্যের বাড়ছে। ইডি সূত্রে খবর, অর্পিতা মুখার্জির বাড়িতে যে ডায়েরি উদ্ধার হয়েছে, সেখানে বিভিন্ন গুরুত্বপূর্ণ তথ্য রয়েছে। যদিও সেখানে সাংকেতিক ভাষায় লেখা রয়েছে। আর যারফলেই রহস্যের পারদ ক্রমশ চড়ছে। কোড ল্যাঙ্গুয়েজে কী লেখা রয়েছে ওই ডায়েরিতে? তা জানতে মরিয়া ইডি আধিকারিকরা। আর সেই কারণেই বিশেষজ্ঞদের সাহায্য নিতে চলেছে কেন্দ্রীয় তদন্তকারী সংস্থা। ডায়েরির কোড ল্যাঙ্গুয়েজ ডিকোড করার জন্য আজ তাই বিশেষজ্ঞদের ডাকা হয়েছে ইডি অফিসে।
ইডি সূত্রে খবর, অর্পিতার ফ্ল্যাট থেকে উদ্ধার হয়েছে একটি কালো রঙের ডায়েরি ও একটি পায়োনিয়রের নোটবুক।
অর্পিতা মুখোপাধ্যায়ের হরিদেবপুরে ফ্ল্যাটে তল্লাশি চালায় কেন্দ্রীয় তদন্তকারী সংস্থা। সেখানে পাওয়া গিয়েছে অনেক কিছুই! তারমধ্যে সিজার লিস্টে দুটি ডায়েরির কথা উল্লেখ করা হয়েছে। কীসের ডায়েরি? ইডি সূত্রের খবর, একটি ৪০ পাতার, আর একটি ১১ পাতার। অর্পিতা মুখোপাধ্যায়ের ফ্ল্যাট থেকে দুটি ডায়েরি উদ্ধার হয়েছে। ৪০ পাতার কালো ডায়েরিটির উপর আবার লেখা, শিক্ষা দফতর, পশ্চিমবঙ্গ রাজ্য সরকার। সঙ্গে উদ্ধার হয়েছে ১১ পাতার একটি পকেট ডায়েরিও।
তদন্তকারীদের দাবি, অর্পিতার মুখোপাধ্যায়ের ফ্ল্যাট থেকে এখনও পর্যন্ত যেসব নথি পাওয়া গিয়েছে, তাতেও তাঁর সঙ্গে পার্থ চট্টোপাধ্যায়ের যোগসূত্রের স্পষ্ট প্রমাণ মিলেছে। শুধু তাই নয়, শিক্ষক নিয়োগ সংক্রান্ত বিভিন্ন নথি অর্পিতার ফ্ল্যাটেই লুকিয়ে রেখেছিলেন প্রাক্তন শিক্ষামন্ত্রী। এখন ইডি সূত্রে খবর, তদন্তে অর্পিতা সহযোগিতা করলেও পার্থ চ্যাটার্জি করছেন না। জেরায় ইতিমধ্যেই বেশ কিছু গুরুত্বপূর্ণ তথ্য দিয়েছেন অর্পিতা। কিন্তু উত্তর এড়াচ্ছেন পার্থ। কনফারেন্স হলে অস্থায়ী লক-আপ তৈরি করে পার্থকে রাখা হয়েছে। আর ইডির লক-আপে আছেন অর্পিতা। দুজনকে জেরা করে এই দুর্নীতির সঙ্গে জড়িত 'অদৃশ্য' হাতদের সন্ধান চায় ইডি।
0 মন্তব্য(গুলি):
একটি মন্তব্য পোস্ট করুন