রাজ্যের ১০০ দিনের কাজ নিয়ে বিতর্ক কিছুতেই পিছু ছাড়ছে না। এবার ফের একবার তৈরি হল অনিশ্চয়তা। হাই কোর্টে মামলাটি ছিল বিচারপতি সৌমেন সেন এবং বিচারপতি মিতা দাস দে-র ডিভিশন বেঞ্চে। মঙ্গলবার সেই মামলাটি ছেড়ে দিল ডিভিশন বেঞ্চ। এর আগে এই মামলা ছিল কলকাতা হাই কোর্টের প্রধান বিচারপতি টিএস শিবজ্ঞানমের বেঞ্চে। তিনি সব জনস্বার্থ মামলা ছেড়ে দেন। সেই সময় এই ১০০ দিনের কাজের মামলাও ছেড়ে দিয়েছিলেন তিনি। তার পরে যেখানে মামলা গিয়েছিল, সেই ডিভিশন বেঞ্চও ছেড়ে দিল মামলাটি।
১০০ দিনের কাজে দুর্নীতির অভিযোগে হাই কোর্টে মামলা দায়ের করেছিলেন রাজ্যের বিরোধী দলনেতা শুভেন্দু অধিকারী। তিনি ওই ঘটনায় সিবিআই তদন্তের আবেদন জানান। অন্য দিকে, জনস্বার্থ মামলা করেছিল পশ্চিমবঙ্গ ক্ষেত মজদুর সংগঠন। তাদের আবেদন ছিল, রাজ্য বনাম কেন্দ্রের দ্বন্দ্বের কারণে শ্রমিকেরা কাজ পাচ্ছেন না। প্রাপ্য মজুরি থেকে বঞ্চিত হচ্ছেন। তাঁদের কাজ এবং মজুরি ফিরিয়ে দেওয়া হোক।
হাই কোর্টের নির্দেশে তৈরি হয় যাচাই কমিটি। এক জন নোডাল অফিসারের নেতৃত্বে গঠিত ওই কমিটিতে রাজ্য এবং কেন্দ্রীয় সরকারের প্রতিনিধিরা রয়েছেন। সেই কমিটি গত এপ্রিল মাসে কোর্টে রিপোর্ট দিয়ে জানায়, ১০০ দিনের দুর্নীতিতে টাকা উদ্ধার করা গিয়েছে। চার জেলা থেকে ২.২ কোটি টাকা উদ্ধার হয়েছে। ওই টাকা এখন রাজ্যের কাছে রয়েছে। প্রধান বিচারপতি টিএস শিবজ্ঞানম এবং বিচারপতি চৈতালি চট্টোপাধ্যায়ের ডিভিশন বেঞ্চে কমিটি আরও জানায়, ১০০ দিনের কাজে দুর্নীতির অভিযোগ তুলে কেন্দ্রীয় দল রাজ্য পরিদর্শনে এসেছিল। তারা হুগলি, পূর্ব বর্ধমান, মালদহ এবং দার্জিলিং এই চার জেলায় ৫ কোটি টাকা দুর্নীতির অভিযোগ করে। কেন্দ্রীয় দল জানিয়েছিল, প্রকৃত সুবিধাভোগীদের বঞ্চিত করে ওই টাকা অন্য ব্যক্তিদের ব্যাঙ্ক অ্যাকাউন্টে গিয়েছিল। সেই টাকার কিছু অংশ উদ্ধার করা গিয়েছে। উদ্ধার করা ওই টাকা কেন্দ্রের কাছে ফেরত পাঠানো হবে।
কেন্দ্রের কাছে প্রধান বিচারপতি জানতে চান, ওই চার জেলা বাদে রাজ্যের অন্যত্র ১০০ দিনের কাজ শুরু করা যাবে কি না। বাকি জায়গায় কাজ শুরু হলে কেন্দ্র কি ফান্ড দেওয়া শুরু করবে? উদ্ধার করা টাকা প্রকৃত সুবিধাভোগীদের দেওয়া যায় কি না, সে বিষয়েও প্রশ্ন তুলেছে হাই কোর্ট। মে মাসে যখন এই মামলার শুনানি হওয়ার কথা ছিল, তখন এই সব প্রশ্নের উত্তর জেনে আসতে কেন্দ্রের আইনজীবীকে নির্দেশ দেয় প্রধান বিচারপতির বেঞ্চ। রাজ্যকে হাই কোর্টের নির্দেশ, কেন জব কার্ড হোল্ডারদের বেকার ভাতা দেওয়া হবে না রিপোর্ট দিয়ে আদালতকে তা জানানোর কথাও বলে। এর পরে প্রধান বিচারপতির বেঞ্চ মামলাটি ছেড়ে দেয়। তার পরে যে বেঞ্চে গিয়েছিল মামলাটি, মঙ্গলবার তারাও ছেড়ে দিল।
0 মন্তব্য(গুলি):
একটি মন্তব্য পোস্ট করুন