ধর্ষণ করার সময়কার ভিডিও তুলে রেখেছিল অভিযুক্তেরা। ঘটনার পরে যাতে নির্যাতিতা মুখ খুলতে না পারেন, কোথাও একটাও কথা ফাঁস না করেন, তার জন্য ওই সময়কার দু'টি ভিডিও দেখিয়ে তাঁকে ব্ল্যাক মেইল করা হয়েছিল। গত ২৫ জুন অভিযোগ পত্রে নির্যাতিতা এই কথা স্পষ্ট উল্লেখ করেছিলেন। এর পাশাপাশি, তাঁকে ওই ভিডিও দেখিয়ে ব্ল্যাক মেইল করে বলা হয়েছিল, এরপর থেকে তাঁকে যখন যেখানে ডাকা হবে, তখন সেখানে পৌঁছে যেতে হবে। একটু এদিক থেকে ওদিক হলেই ফাঁসকরে দেওয়া হবে সেই ভিডিও। এবার অভিযুক্তদের একজনের মোবাইল থেকে সেই ভিডিও উদ্ধার করল পুলিশ। পাশাপাশি, কলেজের ৭ ঘণ্টার সিসিটিভি ফুটেজও সংগ্রহ করা হয়েছে।
অভিযোগ পত্রে নির্যাতিতা জানিয়েছিলেন, ইউনিয়ন রুম থেকে পালিয়ে ব্যাগ থেকে বেরতে গেলে তিনি দেখেন কলেজের মেইন গেট বন্ধ। তখন নিরাপত্তারক্ষীকে হাজার বলেও কোনও লাভ হয়নি। ইতিমধ্যেই তার পিছু পিছু চলে এসেছিল অভিযুক্ত তিন জন। মনোজিৎ মিশ্র, জায়েদ আহমেদ এবং প্রমিত মুখোপাধ্যায়। এর পরে নির্যাতিতা পা ধরেও তাঁকে ছেড়ে দেওয়ার আর্জি জানান, কিন্তু, সেখান থেকে তাঁকে জোর করে ফের নিয়ে যাওয়া হয় ইউনিয়ন রুমে৷ তারপর 'J'-এর নির্দেশে বাকি দু'জন তাঁকে জোর করে টেনে ঢুকিয়ে দেয় গার্ড রুমে। গার্ডকে ঘরের বাইরে বসতে বলে এবং তাঁকে ও 'J' কে রেখে দরজা বাইরে থেকে বন্ধ করে দেয়৷এরপর 'J' তার উপর অত্যাচার চালালে গোটা ঘটনারই ভিডিও করা হয়। নির্যাতনের পরে মুখ বন্ধ রাখার জন্য ওই দুই ভিডিও দেখিয়ে নির্যাতিতাকে হুমকি দেওয়া হয়েছে বলেও অভিযোগ পত্রে জানিয়েছিলেন নির্যাতিতা। তিন অভিযুক্তকে গ্রেফতারির পরেই তাদের কাছ থেকে নিয়ে নেওয়া হয়েছিল তাদের মোবাইল। সেই মোবাইল খতিয়ে দেখেই ওই দুই ভিডিও পেয়েছে পুলিশ৷মেডিক্যাল রিপোর্টে নির্যাতিতার গলা, ঘাড়ে আঁচড়, শরীরের ওপরের অংশ বুকেও আঘাতের দাগ এবং যৌনাঙ্গে আঘাত (যেটা বলপূর্বক) পাওয়ার গিয়েছে। চিকিৎসকদের তরফে জানানো হয়েছে, এই ধরনের আঘাত যৌন হেনস্থা ও ধর্ষণ জনিত কারণেই হয়ে থাকে। এছাড়া মেডিক্যাল পরীক্ষা করানোর সময়ও ট্রমার মধ্যে ছিলেন নির্যাতিতা। চিকিৎসকের কাছেও তাঁকে জোর করে বলপূর্বক আটকে রেখে ধর্ষণ করা হয়েছিল বলেও জানিয়েছিলেন নির্যাতিতা।
0 মন্তব্য(গুলি):
একটি মন্তব্য পোস্ট করুন