বিচারপতি অভিজিৎ গঙ্গোপাধ্যায়ের বেঞ্চ বয়কটের ডাক। আর এই ঘটনাকে কেন্দ্র করে সকাল থেকেই উত্তাল কলকাতা হাইকোর্ট। সকালে বিচারপতি অভিজিৎ গঙ্গোপাধ্যায়ের এজলাসে ঢুকতে গেলে তৃণমূল সমর্থিত আইনজীবীরা বিজেপি, সিপিএম ও কংগ্রেস সমর্থিত আইনজীবীদের বাধা দেন বলে খবর পাওয়া গিয়েছে আদালত সূত্রে।
পরে দু'পক্ষের মধ্যে হাতাহাতি, ধস্তাধস্তিও হয়। বিজেপি তরফের একাধিক আইনজীবী প্রধান বিচারপতির বেঞ্চে দৃষ্টি আকর্ষণ করে বিষয়টি উল্লেখ করলে প্রধান বিচারপতি নিজেদের মধ্যে বিষয়টি মিটিয়ে নেওয়ার আর্জি জানান। কিন্তু তার পরেও এই চিত্রের বদল হয়নি।
অপরদিকে, বিচারপতি অভিজিৎ গঙ্গোপাধ্যায় এই পরিস্থিতির মধ্যেও সিঙ্গেল বেঞ্চে নিজের শুনানির কাজ চালিয়ে যান। তবে তিনি পরিষ্কার জানান, এই মুহূর্তে তিনি দুই পক্ষের কোনও এক পক্ষ যদি উপস্থিত না থাকে, তাহলে কোনও মামলায় তিনি নির্দেশ দেবেন না। ইতিমধ্যে প্রধান বিচারপতি রাজ্যের অ্যাডভোকেট জেনারেল সৌমেন্দ্রনাথ মুখোপাধ্যায়, বর্ষীয়ান আইনজীবী অনিন্দ্য মিত্র ও বিভিন্ন রাজনৈতিক দলের প্রতিনিধিদের সঙ্গে ও অ্যাসিস্ট্যান্ট অ্যাডিশনাল সলিসিটর জেনারেল বিল্বদল ভট্টাচার্যর এই সমস্যা নিয়ে কথা বলবেন। তার পর সমাধানের বিষয়টি নিয়ে মতামত দেবেন বলে জানা গিয়েছে।
এদিকে আদালতের প্রথমার্ধ শেষ হওয়ার পরই কলকাতা হাইকোর্টের বি গেটের সামনে একাধিক রাজনৈতিক দল বিক্ষোভ দেখাতে শুরু করে। সিপিআইএমের তরফের বিক্ষোভে উল্লেখ করা হয় বিচারপতি অভিজিৎ গঙ্গোপাধ্যায় দুর্নীতির বিরুদ্ধে মুখ খুলেছেন বলে শাসক দল বিচারপতিকে বাকরুদ্ধ করতে চাইছে। আসলে আদালতকেও নিজেদের কব্জায় নিতে চাইছে শাসক দল। সকালবেলা বর্ষীয়ান আইনজীবী বিকাশরঞ্জন ভট্টাচার্যকে শাসকদলের আইনজীবীরা হেনস্তা করা হয়েছে বলে অভিযোগ করেন তাঁরা।
অন্যদিকে বিচারপতি অভিজিৎ গঙ্গোপাধ্যায়, যাকে নিয়ে এই মুহূর্তে কলকাতা হাইকোর্ট চত্বর উত্তাল, সেই বিচারপতি একটি মামলার শুনানির সময় তাঁর বিরুদ্ধে যে চিঠি শাসক দলের তরফে দেওয়া হয়েছে, সেই ব্যাপারে তিনি বর্ষীয়ান আইনজীবী চণ্ডীচরণ দে-কে বলেন, "আমার বিরুদ্ধে লেখা চিঠিতে আপনি স্বাক্ষর করেছেন। এটা আমার খুব খারাপ লেগেছে। চিঠিতে স্বাক্ষর করতে গিয়ে আমার কথা মনে পড়ল না আপনার ?"
চণ্ডীচরণ দের উদ্দেশ্যে বিচারপতি আরও বলেন, "চন্ডীবাবু আপনি এবং অশোক দেব আমার বিরুদ্ধে যখন সই করেছেন, আমি খুব দুঃখ পেয়েছি। আমি দুর্নীতি দেখলে তার বিরুদ্ধে রুখে দাঁড়াবো। তাতে আমার মাথায় বন্দুক ঠেকালেও আমি থামবো না। কোনও আমলেই দুর্নীতির শেষ নেই। দুর্নীতি বন্ধ করতে আপনারা আদালতকে সহযোগিতা করুন।"
0 মন্তব্য(গুলি):
একটি মন্তব্য পোস্ট করুন