সম্প্রতি নবম-দশম নিয়োগ দুর্নীতি মামলায় চার্জশিট পেশ করেছে কেন্দ্রের তদন্তকারী সংস্থা সিবিআই। তাতে বেশ কয়েকজন প্রভাবশালীর নামও রয়েছে। প্রাক্তন শিক্ষামন্ত্রী পার্থ চট্টোপাধ্যায়ের নাম না থাকলেও তালিকায় আছেন শান্তিপ্রসাদ সিনহা, সুবীরেশ ভট্টাচার্য, কল্যাণময় গঙ্গোপাধ্যায়, সমরজিৎ আচার্য, অশোক কুমার সাহারা।
সূত্রের আরও খবর, সেই চার্জশিটে উল্লেখ করা হয়েছে, কোভিডের সময় লকডাউনে গোটা দেশের সঙ্গে এ রাজ্যও যখন ঘরবন্দি, সেই সময় গোপনে চলেছে এই দুর্নীতির প্রস্তুতি। কোভিডের প্রথম ঢেউ যখন আছড়ে পড়ে, সেই মে-জুন মাস নাগাদ যখন মানুষ ঘরে আতঙ্কের মধ্যে রয়েছেন, সেই সময় স্কুল সার্ভিস কমিশনের দফতরে ভুয়ো রেকমেন্ডেশন লেটার তৈরির কাজ চলেছে। তার ভিত্তিতে পরবর্তীকালে চাকরি পেয়েছেন অনেকেই বলে সূত্রের দাবি।
এমন অনিয়ম কারা করাতেন? সিবিআই এ প্রসঙ্গে সুবীরেশ ভট্টাচার্য, এসপি সিনহাদের নামের উল্লেখ রেখেছেন চার্জশিটে বলেও খবর। সূত্রের দাবি, এমনও সিবিআইয়ের চার্জশিটে বলা হয়েছে, সুবীরেশই এই দুর্নীতির অন্যতম প্রধান মাথা। ইতিহাসের প্রশ্নে ভুল নিয়ে একটি মামলা হাইকোর্টে চলছে। সেই ঘটনাতেও সুবীরেশ-যোগের উল্লেখ রয়েছে সিবিআইয়ের চার্জশিটে বলে সূত্রের দাবি।
ওএমআর শিট স্ক্যান করার দায়িত্বে একটি বেসরকারি সংস্থা ছিল। সেই স্ক্যানের পর সিডি আকারে সমস্ত বিস্তারিত সুবীরেশ ভট্টাচার্যের কাছেই জমা হয় বলে সিবিআই সূত্রে খবর। যদিও নিয়ম মোতাবেক তা সুবীরেশের হাতে সরাসরি যাওয়ার কথা নয়। অন্যদিকে সিবিআই সেই সিডি এখনও হাতেও পায়নি। তদন্তকারীদের অনুমান, সেই তথ্যপ্রমাণ লোপাট করা হয়েছে বা নষ্ট করে দেওয়া হয়েছ।
সিবিআই সূত্রে খবর, শুধু লিখিত পরীক্ষাতেই কারচুপি নয়, বেআইনি পথে নম্বর দেওয়া হয়েছে পার্সোনালিটি টেস্টেও। অর্থাৎ কোভিডের ভয়ে ঘরে ঘরে মানুষ যখন প্রমাণ গুনছেন, ভয়ে, উদ্বেগে কুঁকড়ে রয়েছেন, সে সময়ই এসএসসির দফতরে বেআইনি নিয়োগের কারবার চলছিল বহাল তবিয়তে। কিন্তু সে সময় পার্থ চট্টোপাধ্যায় ছিলেন শিক্ষামন্ত্রী। বিভিন্ন মহলে প্রশ্ন উঠতে শুরু করেছে, কোন অঙ্কে চার্জশিট থেকে বাদ পড়ল তাঁর নাম? যদিও সিবিআই সূত্রে খবর, প্রথম চার্জশিটে কীভাবে দুর্নীতি সংগঠিত হয়েছে তার উল্লেখ রয়েছে। তবে এরপর সাপ্লিমেন্টারি চার্জশিট আসার কথা। তাতে পার্থর নাম থাকে কি না সেদিকেই নজর সমস্ত মহলের।
0 মন্তব্য(গুলি):
একটি মন্তব্য পোস্ট করুন