কর্নাটকের প্রাক্তন পুলিশপ্রধান ওম প্রকাশের রহস্যময় মৃত্যু ঘিরে চাঞ্চল্য চরমে। রবিবার তাঁকে নিজের বেঙ্গালুরুর বাড়িতে মৃত অবস্থায় পাওয়া যায়। সংবাদ সংস্থা পিটিআই জানিয়েছে, প্রাক্তন ওই পুলিশকর্তার স্ত্রী পল্লবী এবং কন্যাকে রবিবার রাত থেকে টানা ১২ ঘণ্টা জিজ্ঞাসাবাদ করা হয়েছে। জেরায় একাধিক গুরুত্বপূর্ণ তথ্য সামনে এসেছে বলে সূত্রের খবর। তদন্তকারীরা জানতে পেরেছেন, রবিবার দুপুরে স্ত্রীর সঙ্গে বচসায় জড়িয়ে পড়েছিলেন ৬৮ বছরের ওম। তখনই তাঁর দিকে লঙ্কাগুঁড়ো ছুড়ে মারা হয়। স্বামীকে দড়ি দিয়ে বেঁধে ধারালো অস্ত্রের আঘাত করেন স্ত্রী। সেই আঘাতেই মৃত্যু হয়েছে ওমের। খুনের পর বান্ধবীকে ফোন করে তাঁর স্ত্রী বলেন, 'রাক্ষসটাকে মেরে ফেলেছি'। রবিবার বেঙ্গালুরুর বাড়ি থেকে ওমের রক্তাক্ত দেহ উদ্ধার করা হয়। সেই সময়ে স্ত্রী ছাড়াও বাড়িতে ছিলেন প্রাক্তন পুলিশকর্তার কন্যা। খুনের ঘটনার সঙ্গে কন্যাও জড়িত কি না, খতিয়ে দেখা হচ্ছে। সূত্রের খবর, খুনের পর ওমের স্ত্রী যে বান্ধবীকে ফোন করেছিলেন, তিনি কর্নাটকেরই আর এক প্রাক্তন পুলিশকর্তার স্ত্রী। তাঁর কাছে খুনের কথা স্বীকারও করে নেন পল্লবী। সেই বান্ধবী নিজের স্বামীকে ঘটনার কথা জানান এবং তাঁর মাধ্যমে খবর পায় পুলিশ। জিজ্ঞাসাবাদে পুলিশ আরও জানতে পেরেছে, সম্পত্তি নিয়ে স্ত্রীর সঙ্গে ওমের বিবাদ ছিল। সম্প্রতি কোনও একটি সম্পত্তি তিনি এক আত্মীয়ের নামে লিখে দিয়েছিলেন। যাতে রাজি ছিলেন না পল্লবী। রবিবার দুপুরেও তা নিয়েই দু-জনের মধ্যে ঝামেলা হয় বলে প্রাথমিক ভাবে তদন্তকারীদের অনুমান। ঝগড়া চলাকালীন প্রাক্তন পুলিশকর্তাকে লক্ষ্য করে লঙ্কার গুঁড়ো ছুড়ে মারেন মহিলা। তার পর তাঁকে দড়ি দিয়ে ঘরের মধ্যেই বেঁধে ফেলেন। দু-টি ধারালো ছুরি দিয়ে ওমকে আঘাত করা হয়েছে বলে জানা গিয়েছে। মারা হয়েছে একটি কাচের বোতল দিয়েও। প্রাক্তন পুলিশকর্তার পেটে এবং বুকে একাধিক আঘাতের চিহ্ন ছিল। তাঁর দেহ ময়নাতদন্তের জন্য পাঠিয়েছে পুলিশ। তার রিপোর্ট দেখে খুনের ধরন সম্পর্কে নিশ্চিত হওয়া যাবে।
পুলিশ সূত্রে খবর, বাড়ির একতলায় থাকতেন ওম এবং তাঁর স্ত্রী। কন্যা থাকতেন উপরের তলায়। ঘটনার সময়ে তিনি কোথায় ছিলেন, খতিয়ে দেখা হচ্ছে। ওই সময়ে বাড়িতে আরও এক জন উপস্থিত ছিলেন। বেঙ্গালুরু পুলিশের সহকারী কমিশনার বিকাশ কুমার জানিয়েছেন, রবিবার বিকেল ৪টে নাগাদ ওমের মৃত্যুর খবর পান তাঁরা।
১৯৮১ সালের ব্যাচের আইপিএস আধিকারিক ছিলেন ওম। বিহারের চম্পারণ এলাকার বাসিন্দা ছিলেন তিনি। ২০১৫-১৭ সাল পর্যন্ত কর্নাটকের ডিজিপি ছিলেন। ২০১৭ সালে কর্নাটক পুলিশের প্রধান পদে থাকাকালীনই অবসর নেন।
0 মন্তব্য(গুলি):
একটি মন্তব্য পোস্ট করুন