ওয়াকফ আইনের প্রতিবাদে মুর্শিদাবাদে পরিস্থিতি সামলাতে কেন্দ্রীয় বাহিনী মোতায়েনের নির্দেশ কলকাতা হাইকোর্টের। মুর্শিদাবাদের সুতি, সামসেরগঞ্জ-সহ যেসব জায়গায় পরিস্থিতি অগ্নিগর্ভ, সেখানে মোতায়েন করা হবে কেন্দ্রীয় বাহিনী। শনিবার হাইকোর্টের বিশেষ বেঞ্চ এমন নির্দেশ দিল। আপাতত শুধু মুর্শিদাবাদ জেলায় কেন্দ্রীয় বাহিনী মোতায়েনের নির্দেশ দিল হাইকোর্ট। তবে রাজ্যের অন্য জায়গায় অশান্তি হলে সেখানেও কেন্দ্রীয় বাহিনী যাবে। কেন্দ্রীয় বাহিনীকে সাহায্যের জন্য রাজ্যকে নির্দেশ দিল হাইকোর্ট। ওয়াকফ আইনের প্রতিবাদে মুর্শিদাবাদের সুতি, সামসেরগঞ্জ-সহ বিভিন্ন এলাকা উত্তপ্ত। সরকারি সম্পত্তি ভাঙচুর ও আগুন ধরানো হয়। এমনকি সুতির সুজার মোড়ে পরিস্থিতি সামাল দিতে পুলিশ চার রাউন্ড গুলি চালায় বলে জানান এডিজি আইন-শৃঙ্খলা জাভেদ শামিম। রাজ্যের আবেদন মেনে কয়েক কোম্পানি বিএসএফও মোতায়েন করা হয়েছে।
শনিবার, ১২ এপ্রিল, ২০২৫
২৬ হাজার চাকরি বাতিলের জের; শিক্ষক-শিক্ষাকর্মীদের প্রশাসনিক বদলি নিয়ে বিরাট সিদ্ধান্ত
প্রায় ২৬ হাজার চাকরি-বাতিলের জেরেই শিক্ষক ও শিক্ষাকর্মীদের প্রশাসনিক বদলি স্থগিত করল রাজ্য সরকার। প্রশাসনিক স্তরে বদলি প্রত্যাহার করল রাজ্য স্কুল শিক্ষা দফতর। স্কুল শিক্ষা দফতরের নির্দেশিকা প্রত্যাহারের কথা স্কুল সার্ভিস কমিশনকে জানানো হয়েছে। ছাত্র-শিক্ষক অনুপাত ঠিক রাখার জন্য এই বদলি চালু হয় ২০২৩-এ। ২০২৩ সালের সেই অর্ডারই প্রত্যাহার করল রাজ্য স্কুল শিক্ষা দফতর। শিক্ষকদের বদলি নিয়ে নতুন করে আইনি জটিলতাও চায় না রাজ্য। তাই আপাতত স্থিতাবস্থায় না ফেরা পর্যন্ত কোনও বদলি হবে না বলেই জানানো হয়েছে। প্রসঙ্গত উল্লেখ্য, চাকরিহারা শিক্ষকদের দাবি মেনে নিয়ে যোগ্য এবং অযোগ্য শিক্ষকদের তালিকা প্রকাশ করতে চলেছে এসএসসি। চাকরিহারা শিক্ষকদের বেতন দেওয়া হবে কি না, সে বিষয়েও আইনি পরামর্শ নিচ্ছে রাজ্য সরকার।
নওশাদের গাড়িতে লরির ধাক্কা! কেমন আছেন বিধায়ক?
কলকাতা থেকে বাড়ি ফেরার সময় বড়সড় দুর্ঘটনার হাত থেকে রক্ষা পেলেন দক্ষিণ ২৪ পরগনার ভাঙড়ের বিধায়ক নওশাদ সিদ্দিকি। শুক্রবার রাত সাড়ে ১০টা নাগাদ হাওড়ার ডোমজুড়ের অঙ্কুরহাটি চেকপোস্টের কাছে বিধায়কের গাড়ি দাঁড়িয়ে ছিল। সেই সময় একটি ট্রাক এসে তাঁর গাড়িতে ধাক্কা মারে। তবে এই দুর্ঘটনায় আহত হননি বিধায়ক নওশাদ।
পুলিশ সূত্রে জানা গিয়েছে, কলকাতা থেকে বাড়ি ফিরছিলেন আইএসএফ বিধায়ক। মাঝে কিছু ক্ষণের জন্য সিগন্যালে তাঁর গাড়ি ডোমজুড়ের অঙ্কুরহাটি চেকপোস্টের কাছে দাঁড়িয়েছিল। তখনই বাঁ দিক থেকে একটি ট্রাক এসে বিধায়কের গাড়িতে ধাক্কা মারে। স্থানীয় সূত্রে খবর, ধাক্কার তীব্রতা এতটাই বেশি ছিল যে গাড়ির সামনের দিকের একটি টায়ার ফেটে যায়। এই ঘটনায় বিধায়ক অল্পের জন্য রক্ষা পান। তিনি বা তাঁর গাড়িচালক এবং নিরাপত্তারক্ষীদের কেউ আহত হননি।
শুক্রবার, ১১ এপ্রিল, ২০২৫
নারিন তাণ্ডব; জিতল কেকেআর
নেতৃত্বে ফিরলেন, দেখলেন, কিন্তু জয়ে ফেরা হল না মহেন্দ্র সিং ধোনির। বলা ভস্ল, নাইট রাইডার্সের কাছে কার্যত পর্যুদস্ত হল চেন্নাই সুপার কিংস। রাহানেদের কাছে ৮ উইকেটে হারল সিএসকে। তাও ৯ ওভার বাকি থাকতেই। প্রথমে চিপকের মাঠে সবচেয়ে কম রান করার লজ্জার নজির গড়ল তারা। তারপর অনায়াসে ম্যাচ ছিনিয়ে গেল কেকেআর। আর দুই ইনিংসেই নায়কের নাম সুনীল নারিন। লখনউ ম্যাচের ধাক্কা সামলে জয়ের সরণিতে ফিরল নাইটরা। লিগ টেবিলে উঠে এল তিন নম্বরে। এদিন চিপকে টসে জিতে প্রথমে বল করার সিদ্ধান্ত নেন নাইট অধিনায়ক অজিঙ্ক রাহানে। প্রথম একাদশে মইন আলিকে খেলানো মাস্টারস্ট্রোক হল নাইটদের জন্য। মইন ফেরালেন ডেভন কনওয়েকে (১২)। পরের ওভারের শুরুতেই হর্ষিত রানা আউট করেন রাচীন রবীন্দ্রকে (৪)। বরুণ চক্রবর্তীর জালে বন্দি হলেন বিজয় শঙ্কর (২৯)। এবার শিকার শুরু করলেন নারিন। প্রথমে ফেরালেন রাহুল ত্রিপাঠীকে (১৬)। তারপর নিলেন জাদেজার (০) উইকেট। অন্যদিকে অশ্বিনকে (১) ফেরালেন হর্ষিত রানা। দীপক হুডা রানের খাতা না খুলেই ফিরে গেলেন। অবশেষে নয় নম্বরে এলেন ধোনি। আর এবারও সেই নারিনের ঘূর্ণিতে আউট হয়ে ফিরলেন। ৪ বলে সংগ্রহ মাত্র ১ রান। ৬৫ রানে ৪ উইকেট থেকে আচমকাই ৭৫ রানে ৮ উইকেট হয়ে গেল চেন্নাই। শেষ পর্যন্ত শিবম দুবের ৩১ রানের সুবাদে মাত্র ১০৩ রান করে চেন্নাই। নাইটদের হয়ে ৩ উইকেট সুনীল নারিনের। দুটি করে উইকেট বরুণ চক্রবর্তী ও হর্ষিত রানার। চিপকে নারিন-বরুণরা যেভাবে ভেলকি দেখালেন, তাতে একই রকম প্রত্যাশা তৈরি হতে পারত নুর-জাদেজা-অশ্বিনদের নিয়ে। ম্যাচ জেতা না হোক, অন্তত প্রতিরোধ দেখা যেতেই পারত। কিন্তু কোথায় কী? প্রথম ওভারের শেষ থেকেই ঘুরতে শুরু করল নারিন-চক্র। খলিল আহমেদের শেষ বলে ছক্কা দিয়ে শুরু। তারপর অশ্বিনের এক ওভারেও দুটি ছয় হাঁকালেন। নারিনের তাণ্ডব দেখে মনে হল না এই পিচে কোনও বিপদ আছে। যোগ্য সঙ্গ দিলেন কুইন্টন ডি’ককও। ১৬ বলে ২৩ রান করলেন প্রোটিয় ক্রিকেটার। কোনও চার না মারতে পারলেও তিনটি ছক্কা হাঁকালেন তিনি। আর নারিনের খাতায় ৫টি ছয়। ১৮ বলে ৪৪ রানে ফিরলেন তিনি। তখন জিততে বাকি আর মাত্র ১৯ রান। সেই কাজটা হাসতে হাসতেই করে দিলেন রাহানে (২০) ও রিঙ্কু (১৫)। শেষ পর্যন্ত ৯ ওভার বাকি থাকতে ৮ উইকেট হাতে নিয়ে সহজেই ম্যাচ জিতল কেকেআর। ৬ ম্যাচ খেলে ৬ পয়েন্ট রাহানেদের।
যোগ্য-,অযোগ্য তালিকা প্রকাশ করবে কমিশন;শিক্ষামন্ত্রী ও চাকরিহারাদের বৈঠকে আশার আলো!
যোগ্যদের তালিকা প্রকাশ করা হোক— সুপ্রিম কোর্টের রায়ের পর থেকে এমন দাবিই তুলে আসছেন প্রায় ২৬ হাজার চাকরিহারা শিক্ষক এবং শিক্ষাকর্মী। সেই দাবি নিয়েই তাঁরা শুক্রবার দেখা করেছিলেন রাজ্যের শিক্ষামন্ত্রী ব্রাত্য বসুর সঙ্গে। সেখানে শিক্ষা দফতরের আশ্বাস, যোগ্য-অযোগ্যদের তালিকা তৈরি করতে শুরু করেছে এসএসসি (স্কুল সার্ভিস কমিশন)। আইনি পরামর্শ নেওয়ার পরে তা প্রকাশ করা হবে। এই আশ্বাসেই কিছুটা স্বস্তিতে চাকরিহারারা। তাঁদের দাবির সঙ্গে মৌলিক কোনও বিরোধ নেই বলে জানিয়ে দিয়েছেন ব্রাত্যও। তার পরেও কসবাকাণ্ডের কাঁটা রয়ে যাচ্ছে।
শুক্রবার আবারও সাংবাদিক বৈঠক করে কলকাতা পুলিশ কসবাকাণ্ড নিয়ে নতুন তত্ত্ব তুলে ধরেছে। এর আগে 'বাধ্য হয়ে হালকা বলপ্রয়োগ' কেন করতে হয়েছিল, সেই ব্যাখ্যা দিয়েছিল কলকাতা পুলিশ। এ বার তারা জানাল, শিক্ষকদের ওই কর্মসূচিতে ছিলেন 'বহিরাগতেরা'ও। খোদ কলকাতার পুলিশ কমিশনার মনোজ বর্মাও নেমে পড়েন ব্যাট হাতে। তিনি জানান, শিক্ষকেরা সেখানে অশান্তি করবেন, হিংসাত্মক হয়ে পড়বেন, এটা তাঁরা আশা করেননি। যদিও তিনি ফের মেনে নেন, বিক্ষোভকারী শিক্ষককে লাথি মারা ঠিক হয়নি। শিক্ষককে লাথি মারায় অভিযুক্ত সেই সাব ইনস্পেক্টর (এসআই) রিটন দাসকে কসবকাণ্ডের তদন্তের দায়িত্ব থেকে সরিয়ে দেওয়া হয়েছে।
চাকরিহারাদের অনশনমঞ্চ থেকে 'গো-ব্যাক' অভিজিৎকে!
চাকরিহারাদের পাশে দাঁড়িয়ে গত দু'দিন ধরেই এসএসসি ভবন চত্বরে যাচ্ছেন বিজেপি সাংসদ অভিজিৎ গঙ্গোপাধ্যায়। শুক্রবারও গেছিলেন। কিন্তু এদিন কিছুটা অস্বস্তিতে পড়তে হল তাঁকে। কারণ এদিন আন্দোলনকারীদের পক্ষ থেকে তাঁকে দেওয়া হল 'গো-ব্যাক' স্লোগান। যদিও অভিজিৎ বাবু মনে করছেন, যারা তাঁর বিরুদ্ধে স্লোগান দিয়েছেন তাঁরা আদতে চাকরিহারা নন। তাঁরা এসইউসি-সিপিএম পার্টির দালাল।
গত বুধবার এসএসসি চেয়ারম্যানের সঙ্গে দেখা করেছিলেন অভিজিৎ গঙ্গোপাধ্যায়। ওএমআর শিটের মিরর ইমেজ প্রকাশের দাবিই জানান তিনি। এদিন রাজ্য সরকারকে ২ ঘণ্টার 'ডেডলাইন' দেন বিজেপি সাংসদ। বলেন, এই সময়ের মধ্যে যদি রাজ্য এসএসসি-কে এই বিষয়ে নির্দেশিকা না পাঠায়, তা হলে বোঝা যাবে চাকরি ফেরানোর ইচ্ছে নেই তাঁদের। পরবর্তী ক্ষেত্রে বৃহত্তর আন্দোলনের হুঁশিয়ারিও দিয়েছেন তিনি। তবে 'গো-ব্যাক' স্লোগান নিয়ে ক্ষোভ উগড়ে দেন অভিজিৎ গঙ্গোপাধ্যায়।
সিপিএম-কে নিশানা করে তাঁর বক্তব্য, "এই আন্দোলনের দখলদারি নিতে চায় তাঁরা। মনে করে সব আন্দোলন তাঁরাই করবে। আরজি আন্দোলনেও যখন গেছিলাম তখনও আমাকে গো-ব্যাক বলা হয়েছিল। এখানেও কিছু দালাল হাজির হয়েছে। আমার মনে হয় না তাঁরা প্রকৃত শিক্ষক। শুধু দালালি করতে হাজির হয়েছে।" বিজেপি সাংসদ আরও বলেন, এইসব স্লোগান দিয়ে কোনও লাভ নেই। তিনি রাত ১২টা পর্যন্ত থাকতে পারেন। কে কত স্লোগান দেবে তিনি দেখবেন। তাঁদের স্লোগানে কিছু আসে যায়-না, তাঁরা কেউ নন এই আন্দোলনের। অভিজিতের কথায়, 'এদেরকে আমি পিঁপড়ের চেয়ে বেশি গুরুত্ব দিই না।'
চাকরিহারা শিক্ষকের পেটে লাথি, সেই রিটন দাসকে তদন্তভার থেকে সরাল কলকাতা পুলিশ
কসবার ডিআই অফিসে বিক্ষোভ দেখাতে আসা চাকরিহারা শিক্ষকের পেটে লাথি মারা পুলিশ অফিসার রিটন দাসকে মামলার তদন্তভার থেকে সরিয়ে দিল কলকাতা পুলিশ। গত বুধবার কসবার ডিআই অফিসে বিক্ষোভ দেখাতে গিয়েছিলে চাকরিহারা শিক্ষকদের একটা বড় অংশ। পুলিশের বাধা উপেক্ষা করে অফিসের ভিতরে ঢুকে পড়েন বিক্ষোভকারীরা। তখনই পাল্টা পুলিশের বিরুদ্ধে শিক্ষকদের উপরে বেদম লাঠিচার্জের অভিযোগ ওঠে৷ বিক্ষোভকারীদের ছত্রভঙ্গ করার সময় এক চাকরিহারা শিক্ষকের পেটে লাথি মারার অভিযোগ ওঠে কসবা থানার এসআই রিটন দাসের বিরুদ্ধে।
এই ভিডিও ফুটেজ প্রকাশ্যে আসার পর সব মহল থেকেই কলকাতা পুলিশের আচরণ নিয়ে প্রশ্ন ওঠে। এই ঘটনাকে অবাঞ্ছিত বলে স্বীকার করে নিয়েছিলেন রাজ্যের মুখ্যসচিব এবং কলকাতা পুলিশের নগরপাল৷ ঘটনা খতিয়ে দেখারও আশ্বাস দিয়েছিলেন তাঁরা৷পুলিশ সূত্রে খবর, যেহেতু ঘটনার সময় কসবায় থানায় ডিউটি অফিসার হিসেবে রিটন দাস নামে ওই এসআই কর্তব্যরত ছিলেন, তাই প্রাথমিক ভাবে মামলার নথিতে তদন্তকারী অফিসার হিসেবে তাঁর নামই ছিল। কিন্তু যে অফিসারের বিরুদ্ধে চাকরিহারা শিক্ষকদের নির্মম মারের অভিযোগ উঠেছে, তিনিই কেন তদন্তের দায়িত্বে থাকবেন তা নিয়ে প্রশ্ন উঠতে শুরু করেছিল। পুলিশ সূত্রে খবর, কসবায় ডিআই অফিসে চাকরিহারা শিক্ষকদের বিক্ষোভের ঘটনার তদন্তভার সঞ্জয় সিং নামে এক সাব ইন্সপেক্টরকে দেওয়া হয়েছে।